এখানেই বংশের প্রাচীন তরোয়াল ও ঘট সাজিয়ে পুজো হয়। —নিজস্ব চিত্র।
আরামবাগের মাধবপুরে রায় পরিবারের প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পুজোটি জিতা অষ্টমীর পরের দিন পাঁঠা বলি হয়ে শুরু হয়। যদিও প্রতিমার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তবে মূর্তি প্রতিষ্ঠার ক’দিন আগে থেকেই ওই রাজ পরিবারের দু’টি প্রাচীন তরোয়াল এবং ঘট সাজিয়ে নিত্য পুজো চলছে।
রায় পরিবারের সদস্যেরা জানান, পুজোটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তৎকালীন রাজপুতনার বুন্দেলখণ্ড থেকে আসা রাজা নরনাথের দশম পুরুষ শান্তিরাম রায়। ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজার চতুর্থ পুরুষ ইংরেজ আমলে ‘রায়’ উপাধি পান। এখন তাঁদের ১৬তম প্রজন্ম পুজোর প্রাচীন রীতিগুলির কিছু বদল ও সংক্ষিপ্তকরণ করেও ঐতিহ্য ধরে রাখার
চেষ্টা করছেন।
আগে পুজো শুরুর দিন থেকে টানা ১৬ দিন ধরে কয়েকশো পাঁঠা বলি হত। এখন তা কমেছে। নবমীতে গ্রামবাসীদের বার্ষিক মানত হিসাবে কিছু পাঁঠা বলি হয় বটে, তবে রীতি মেনে মেষ বলির বদলে বছর ২৫ ধরে ছাঁচি-কুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ার দিন ঘট তোলা থেকে বাঁকুড়ার নহবত বসানোর রীতিও বন্ধ হয়েছে বছর দশেক হল। ছ’জোড়া ঢাকের বদলে এখন একটাই
ঢাক বাজে।
স্থায়ী মণ্ডপে এক চালায় ডাকের সাজে আসেন দেবী। এলাকায় পুজোর আবহ তৈরি হয় বোধনের দিন থেকেই। ওই দিন থেকে দশমী পর্যন্ত তিন জন পুরোহিত মণ্ডপে থাকেন। সপ্তমী পুজোর শুরুতে যে হোমের আগুন জ্বালানো হয় তা নবমীর পুজো
পর্যন্ত জ্বলে।
রায় পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য আশিস রায় বলেন, “আমাদের নিজেদের তৈরি ট্রাস্টের আয়েই পুজো হয়। জমিদারি বিলোপ হওয়ার পরে আর্থিক সমস্যা এবং একই সঙ্গে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়ে রীতি অনেকটাই বদলেছে। পরিবারের নবীনেরা এ বার পাঁঠা বলি সম্পূর্ণ বন্ধ করা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে।” তিনি আরও জানান, বিবাহিত মহিলাদের আলতা-সিঁদুর বিলি করার প্রথাটা অবিকল রাখা হয়েছে। অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজো মণ্ডপে আগত সমস্ত বিবাহিত মহিলাদের আলতা-সিঁদুর দিতে কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকা বাজেট রাখা হয়। রায় পরিবারের এই পুজো যেন গ্রামবাসীর পুজো
হয়ে ওঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy