Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2021

বোধনেই বিষাদের বোল, বায়না না পেয়ে অপেক্ষা শেষে ঘরে ফিরলেন বহু ঢাকি

কোথাও আনন্দধারা, কোথাও বিষাদসমুদ্র আবার। বরাত না পেয়ে বোধনেই বিষাদের বোল তুলেছেন ঢাকিদের অনেকে।

বরাত না পেয়ে বিষাদগ্রস্ত ঢাকিরা।

বরাত না পেয়ে বিষাদগ্রস্ত ঢাকিরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৩৬
Share: Save:

কোথাও আনন্দধারা, কোথাও বিষাদসমুদ্র আবার। বরাত না পেয়ে বোধনেই বিষাদের বোল তুলেছেন ঢাকিদের অনেকে। বায়না না পেয়ে গঙ্গাস্নান করে খালি হাতেই বাড়ি ফিরেছেন একাধিক জেলার বহু ঢাকি। এই দৃশ্য হুগলির চুঁচুড়ার।

ষষ্ঠীতে বোধন। উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে। তবে বিষাদের সুর বাজছে কোথাও কোথাও। প্রত্যেক বারের মতো বিভিন্ন জেলা থেকে বহু ঢাকিই পঞ্চমীতে জড়ো হয়েছিলেন হুগলি জেলা সদর চুঁচুড়া খড়ুয়াবাজারে। বরাতের আশায়। রাতভর অপেক্ষার পর সকলেই ভেবেছিলেন বরাত পাবেন সকালে। কিন্তু বিধি বাম হয়েছে অনেকেরই। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরেও বহু ঢাকিই বরাত পাননি। ফলে খালি হাতেই তাঁদের ফিরতে হচ্ছে বাড়িতে। বর্ধমানের রায়না থেকে চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজারে এসেছিলেন দিলীপ রুইদাস। হতাশ গলায় তিনি বললেন, ‘‘এই বাজারে প্রতি বছরই আমরা আসি বায়নার জন্য। বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলি এখান এথকেই আমাদের নিজেদের মণ্ডপে ঢাক বাজানোর জন্য নিয়ে যায়। গত বছর করোনার জন্য ঢাক বাজানো বন্ধ ছিল। এ বার অবশ্য এক দিন আগেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে বেরিয়েছিলাম। বাড়িতে বলে এসেছি, পুজোয় ঢাক বাজিয়ে ফিরে নতুন কাপড় কিনে দেব। কিন্তু সারা রাত ধরে রাস্তায় মশার কামড় খেয়ে পড়ে থাকার পর ষষ্ঠীতে বেলা ১২টা বেজে গেল। এখনও কেউ বায়না করতে এল না। মনটা খারাপ হয়ে গেল। এতটা খারাপ অবস্থা হবে বুঝতে পারিনি। সকাল থেকে শুকনো মুড়ি খেয়ে বসেছিলাম। ভাবলাম বায়না হয়তো হয়ে যাবে। এ বার গঙ্গা চান করে বাড়ি ফিরে যাই।’’

দিলীপের মতো বর্ধমানেরই জামালপুর থেকে চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজারে এসেছিলেন কার্তিক রুইদাস। বিষাদের ভার তাঁর গলাতেও। কার্তিক বলছেন, ‘‘বর্ধমানের বিভিন্ন গ্রাম থেকে জনা চল্লিশেক ঢাকি এসেছিলাম। আমরা ঢাক নিয়ে বসে থাকলেও কেউ এল না বায়না করতে। অথচ গত বছর একটা ঢাক আর কাঁসর ঘণ্টা নিয়ে দু’জনে সাত হাজার টাকার বরাত পেয়েছিলাম এই চুঁচুড়াতেই। এ বার বাজার খারাপ। ভাবলাম কম টাকাতেই বাজাব। কিন্তু কেউ দর করতেই এল না।’’

একই কথা জামালপুরেরই বাসিন্দা প্রশান্ত রুইদাসের। তিনি বললেন, ‘‘সারা বছর অন্যের জমিতে মজুর খাটি। কিছু জমি ভাগে চাষ করি। তাতে কোনও রকমে দিন চলে। এখন অনেক ধরনের বাজনা উঠেছে। তাই ঢাকের চাহিদা কমছে। পুজো উদ্যোক্তারাও বাজেট কমিয়ে পুজো করছেন। তাই ঢাকের বায়না হচ্ছে না। ঢাকের লাইনে আসতে চায় না আমার ছেলেটা। তাই ধার দেনা করে একটা টোটো কিনে দিয়েছি ওকে।’’

চুঁচুড়ার মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গার বোধনের প্রস্তুতি, ঠিক তখনই যেন বিসর্জনের সুর উঠল দিলীপ,কার্তিক, প্রশান্তদের ঢাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2021 durga puja Dhaki Drummer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy