Advertisement
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
COVID-19

প্রথম ডোজ় পেতেই হন্যে

ভ্যাকসিনের জোগান না-থাকায় হুগলির বেশিরভাগ জায়গাতেই এ দিন প্রথম ডোজ় দেওয়া যায়নি।

টিকা নেওয়ার লম্বা লাইন। সোমবার গোঘাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

টিকা নেওয়ার লম্বা লাইন। সোমবার গোঘাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া-চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৯:২৪
Share: Save:

দিন গড়াচ্ছে। করোনা সংক্রমণও উত্তরোত্তর বাড়ছে। কিন্তু কোথায় পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন!

দুই জেলাতেই বেশ কিছুদিন ধরে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না-মেলার অভিযোগ উঠছে। সোমবারেও ছবিটা বদলাল না। ভ্যাকসিনের জোগান না-থাকায় হুগলির বেশিরভাগ জায়গাতেই এ দিন প্রথম ডোজ় দেওয়া যায়নি।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বাগবাজারে রাজ্যের সেন্ট্রাল স্টোর থেকে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন আসার কথা ছিল তা মেলেনি। তার জেরে যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রথম ডোজ় পেয়েছেন, এ দিন জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি ভিত্তিতে তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিপদে পড়েছেন উপসর্গযুক্ত পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষজন। তাঁরা টিকার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন।

উত্তরপাড়া কোতরংয়ের বাসিন্দা বিজন দাস বলেন, ‘‘আমি প্রথম ডোজ় নেওয়ার জন্য ঘুরছি। কিন্তু ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনের আকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। করোনা লাফিয়ে বাড়ছে। সব মিলিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছি।’’ উত্তরপাড়া পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিদায়ী কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আসলে আমাদের ৩০০ ভায়াল আসার কথা ছিল। কিন্তু পেয়েছি ৩০টি। তাই কোনওক্রমে দ্বিতীয় ডোজ়টা চালু রেখেছি। আশা করছি, বুধবার প্রথম ও দ্বিতীয়— দু’টি ডোজ়ই চালু করতে পারব।’’

ভ্যাকসিন কম থাকায় খালি দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে আরামবাগ মহকুমার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। তা-ও সব দিন ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। যেমন, গোঘাটের দু’টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সোমবার এবং শুক্রবার ভ্যাকসিন কেন্দ্র খোলা হবে। সোমবার ওই দুই ব্লকে ৫০০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরামবাগ ব্লকে দেওয়া হয়েছে ৩৯৭ জনকে। আর পুরশুড়া ব্লকে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জনকে। খানাকুল-১ ব্লকে ৩৫০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। খানাকুল-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুধুমাত্র শুক্রবার টিকা দেওয়া হবে।

ওই মহকুমার ছ’টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথম দিকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছিল দু’হাজার করে। মাঝে কয়েকদিন সরবরাহ বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার রাতে এবং শনিবার সকালে মাত্র ৫০০টি করে পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। সেগুলির অধিকাংশই সোমবার শেষ হয়ে গিয়েছে।

হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর যেখানে দৈনিক টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে ২৫ হাজার জনের, সেখানে ভ্যাকসিন আসছে দৈনিক ১০-১২ হাজার করে। ফলে, টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারা যাচ্ছে না বলে জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন। বিশেষ করে কোভিশিল্ডের জোগান একেবারে কমে গিয়েছে। ফলে, যাঁরা ওই টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ় আটকে গিয়েছে। জেলায় মোট ২৩২টি টিকাকরণ কেন্দ্র করা হয়েছে। সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে টিকাকরণের জন্য লম্বা লাইন। কিন্তু কয়েকজনকে টিকা দেওয়ার পরে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাকিদের টিকাকরণ হবে না। তাই বহু মানুষকে ফিরে যেতে হচ্ছে।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস জানান, যা ভ্যাকসিন আসছে সেই অনুযায়ী টিকা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। কিছু করার নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE