Advertisement
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
West Bengal Flood Situation

জল নামছে বিভিন্ন জেলায়, ফিরছে বিদ্যুৎ সংযোগও, তবে সাগরের নয়া নিম্নচাপ চিন্তায় রাখছে বানভাসিদের

বন্যায় বিপর্যস্ত জেলাগুলির নিচু এলাকা থেকে ধীরে ধীরে জল নামছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হতে চলা নতুন নিম্নচাপ চিন্তায় রাখছে বানভাসি মানুষজনকে।

এখনও জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গের বহু গ্রাম।

এখনও জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গের বহু গ্রাম। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ঘাটাল ও পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৬
Share: Save:

বন্যায় বিপর্যস্ত জেলাগুলির নিচু এলাকা থেকে ধীরে ধীরে জল নামছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধাপে ধাপে ফেরানো হচ্ছে বিদ্যুতের সংযোগও। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হতে চলা নতুন নিম্নচাপ চিন্তায় রাখছে বানভাসি মানুষজনকে। নতুন বিপদের আশঙ্কায় প্রস্তুতি সেরে রাখছে স্থানীয় প্রশাসনও।

বেশ কয়েক দিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) নতুন করে জল না ছাড়ায় ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ থেকে বন্যার জল নামছে। ঘাটাল, দাসপুর, ডেবরায় নদী এবং সেচখালগুলির জল বহু দিন পরে বিপদসীমার নীচে নেমেছে। জল নামায় শিলাবতী নদীর উপরে ভাসাপোল ধরে যাতায়াত শুরু করেছেন মানুষ। তবে বেশ কিছু এলাকায় এখনও জল জমে রয়েছে। জল রয়েছে চাষের জমিতেও। বন্যায় কোথায় কত বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে, কোথায় চাষের জমি কতটা নষ্ট হয়েছে, তার পরিসংখ্যান নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জলবাহিত রোগের প্রকোপ কমাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।

বন্যার জল নামতে শুরু করায় ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জল এবং বিদ্যুতের সংযোগে যাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে, তার জন্য সতর্ক প্রশাসন। জেলাশাসকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সকলকে বৈদ্যুতিক তার কিংবা খুঁটি স্পর্শ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

বন্যার জল নামছে পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশ থেকেও। পাঁশকুড়া শহর লাগোয়া ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে জল নামলেও নিচু এলাকাগুলিতে এখনও দুর্ভোগে রয়েছেন বানভাসি মানুষজন। দুর্গত এলাকাগুলিতে ত্রাণ পাঠাতে এখনও ভরসা করতে হচ্ছে স্পিডবোটের উপরে। বন্যার জল নামছে হুগলির খানাকুল, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা থেকেও। আগের তুলনায় পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে সোমবার সন্ধ্যা থেকে মাইথন জলাধার থেকে ২৪ হাজার এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।

দু’সপ্তাহ আগে নিম্নচাপের বৃষ্টি এবং তৎপরবর্তী পরিস্থিতিতে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ায় বানভাসি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ। তার পর বৃষ্টি বন্ধ হলেও বহু জায়গা থেকে এখনও জল নামেনি। ডিভিসির ছাড়া জলে জলমগ্ন হয়েছিল বহু গ্রাম। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার মধ্য-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ এলাকা তৈরি হতে পারে। মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে আগেই একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, মূলত তার জেরেই তৈরি হচ্ছে নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হবেন কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE