রাস্তায় টোল আদায়ের অভিযোগ। শুক্রবার তিরোলে। —নিজস্ব চিত্র।
অবৈধ ভাবে উপ-আইন (বাই ল) বানিয়ে রাস্তায় যথেচ্ছ টোল ট্যাক্স আদায়ের অভিযোগ উঠল আরামবাগের তৃণমূল পরিচালিত তিরোল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
দিনকয়েক আগে স্থানীয় বাইশ মাইল থেকে তিরোলগামী রাস্তার মান্দ্রায় ট্রাক্টরপিছু ১০০ টাকা করে টোল আদায়ের সূচনা হতেই এলাকায় ক্ষোভ দেখা যায়। পরের দিন মান্দ্রায় বিক্ষোভ দেখান চাষিরা। পুলিশ গিয়ে বিষয়টি ব্লক প্রশাসন-সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরামর্শ দিয়ে বিক্ষোভ থামে। অভিযোগ মানেননি প্রধান বিলকিস বেগম।
জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত থেকে উপ-আইন তৈরি হলে তা কার্যকর করার আগে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, মহকুমাশাসক, সংশ্লিষ্ট থানা, জেলা ও মহকুমা আদালতে জানাতে হয়। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোথাও কোনও আপত্তি আছে কি না, তা-ও জানতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে স্থানীয় চাঁদুরের রফিকুল ইসলাম, শেখ নিজামুদ্দিন, বাইশ মাইলের শঙ্কর মালিক প্রমুখের অভিযোগ, জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে থাকা রাস্তাটি থেকে পঞ্চায়েত টোল আদায় করবে কেন? আর সেই আইন যদি থেকেও থাকে, তা নিয়ে কোনও আগাম নোটিস দেওয়া হয়নি। নিজেদের ইচ্ছা মতো নিয়ম বানিয়ে প্রধান-সহ পঞ্চায়েতের সদস্যেরা টাকা তোলার কৌশল করেছেন। ট্রাক্টরপিছু যে ১০০ টাকার রসিদ দেওয়া হচ্ছে, তাতে টোলের পরিমাণ লেখার ঘর ফাঁকা থাকছে। তার উপরে ব্যবসা নিবন্ধীকরণ শংসাপত্রের জন্য ফি নেওয়ার ঘর পূরণ করা হচ্ছে।
রফিকুলের অভিযোগ, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এমনিতেই মাঠে অধিকাংশ ধান ও আলুর ক্ষতি হয়েছে। যে টুকু ধান আছে তা চাষিরা মাঠ থেকে তুলছেন। কাউকে আবার আলুর বীজ কিনতে ধান বিক্রি করতে যেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতে চাষিদের পাশে থাকার বদলে উল্টে টোলের নামে ১০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।” চাষিদের তরফে বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে বিহিত চাওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েতের দুর্বল নিজস্ব তহবিলকে মজবুত করতেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রধানের দাবি, “পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে উপ-আইন (বাই ল) বানিয়ে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জেলা পরিষদের অধীনে থাকা মোট চারটি রাস্তায় নেব। মালবাহী ট্রাক্টরপিছু ১০০ টাকা, ট্রাকপিছু ২০০ টাকা। খালি ট্রাকের জন্য ১০০ টাকা। একটিতে (মান্দ্রায়) টোল আদায় শুরু হতেই কিছু মানুষ দিতে আপত্তি করে অন্যায় বিক্ষোভ করছেন। বিডিওকে বিষয়টা জানিয়েছি।”
আরামবাগের বিডিও সুব্রত মল্লিক জানান, পঞ্চায়েতে উপ-আইন তৈরির বিধি থাকলেও এটি কবে, কী ভাবে হয়েছে এবং তা যে কার্যকর হবে, তা নিয়ে তাঁকে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আপত্তির পর আমাকে আগের (২০১৭) একটি বোর্ডের করা উপ-আইন সম্পর্কে জানানো হয়। সেটাও নিয়ম মেনে হয়নি।”
বিডিও আরও জানান, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছে। কী ভাবে উপ-আইন কার্যকর করা যায় এবং তা থেকে আয়ের স্বচ্ছতা রাখা যায়, তা বলা হবে। উপ-আইন প্রণয়ণের আগে কোথায় কোথায় জানানো দরকার, কোন কোন জায়গায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া দরকার, তা-ও বলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy