মঙ্গলাহাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের পর হাওড়ার মঙ্গলাহাটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিধ্বংসী আগুনে সেখানে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বহু কাপড়ের দোকান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলাহাটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন সেখানকার ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, পরিকল্পনা করে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। লক্ষ্য ছিল, মঙ্গলাহাট থেকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের পর শুক্রবার সকালে হাটের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘কোনও রকম অভিযোগ থাকলে পুলিশ তদন্ত করে বার করবে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।’’ পরে মমতা হাটে এসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্য শুনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সিআইডি এই ঘটনার তদন্ত করবে। দমকলও রিপোর্ট জমা দেবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। কারও বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠে থাকলে, এফআইআর দায়ের করে পুলিশ ব্যবস্থাও নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগুন লাগে মঙ্গলাহাটে। হাটের দোকানগুলি বাঁশ এবং কাঠের কাঠামো দিয়ে তৈরি হওয়ায় দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ছড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে। দমকল সূত্রে খবর, ১২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এনে প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। হাটের সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সাগর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে বার বার জানানো হয়েছে, মঙ্গলাহাটে যে কোনও দিন বড় কিছু ঘটতে পারে। ২০০৪ সাল থেকে আমরা অভিযোগ জানিয়ে আসছি। কিন্তু লাভ হয়নি। ১৯৮৭ সালে এই হাটে আগুন লেগেছিল। আবারও সেই ঘটনা ঘটল। প্রায় আড়াই হাজার দোকান ভস্মীভূত হয়েছে।’’
মঙ্গলাহাট সংগ্রাম ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দিলীপ দত্তের অভিযোগ, ‘‘চক্রান্ত করে এই হাটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার জন্যই ঘটানো হয়েছে এই অগ্নিকাণ্ড। তবে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’’ দিলীপের দাবি, এই অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন শান্তিরঞ্জন দে নামে এক ব্যবসায়ী। তাঁর কথায়, ‘‘শান্তিরঞ্জন দে নিজেকে হাটের মালিককে বলে দাবি করেন। উনি চক্রান্ত করে আগুন লাগিয়েছেন।’’ শান্তিরঞ্জনকে গ্রেফতারের দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। শান্তিরঞ্জন অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘হাট নিয়ে প্রচুর মামলা-মোকদ্দমা চলছে। কিন্তু কী ভাবে আগুন লাগল, তা আমি জানি না।’’
ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে আগুন লেগেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক দল আসবে। সম্পূর্ণ রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।’’ ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তাঁদের জন্য যাতে ব্যবসার জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, সেই দাবি জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী অরূপ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy