হাওড়ায় নর্দমা থেকে উদ্ধার মহিলার দেহ। —নিজস্ব চিত্র
হাওড়ায় খোলা নর্দমা থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার করা হল। স্থানীয়দের দাবি, অসাবধানতার জেরে গভীর নর্দমায় পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। তবে মৃতের নাম-পরিচয় এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার নর্দমাগুলি খোলা অবস্থায় পড়ে থাকায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও পুরসভার বক্তব্য, নর্দমার উপর দিয়ে চলাচল করা ঠিক নয়।
রবিবার সকালে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডের ধারে খোলা নর্দমায় এক মধ্যবয়স্ক মহিলার দেহ ভাসতে দেখা যায়। সেই সময় হাওড়া পুরসভার সাফাইকর্মীরা নর্দমা পরিষ্কার করছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সেটি মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ব্যস্ত কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডের ধারে কী ভাবে গভীর নর্দমা খোলা অবস্থায় থাকল, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ওই নর্দমার মুখ খোলা অবস্থায় রয়েছে। তার পাশ দিয়েই যাতায়াত করতে হয় মানুষজনকে। এর আগেও নর্দমায় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকায়। স্থানীয়দের অনুমান, রবিবার কোনও ভাবে ওই মহিলা নর্দমার যে অংশ ঢাকা রয়েছে, সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় অসতর্ক হয়ে খোলা অংশের দিকে পা বাড়িয়ে ফেলেন। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে এমনতিই নর্দমাগুলিতে জল ভর্তি রয়েছে। জলে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
হাওড়া পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দাবি, নর্দমার খোলা মুখ বন্ধ করে দেওয়া হোক। হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন এই প্রসঙ্গে কার্যত দায় এড়িয়ে বলেন, “কোনা এক্সপ্রেসওয়ে জাতীয় সড়ক। এর দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভাল রাখার জন্য নর্দমার উপর ফাঁকা জায়গা রাখা হয়, যাতে পাম্পের সাহায্য জল বের করে দেওয়া যায়। নর্দমার উপরের জায়গা দিয়ে হাঁটার কথা নয়। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।”
প্রসঙ্গত, হাওড়ার পুর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সালকিয়ার তাঁতিপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় বছর বাইশের তরুণী পূরবী দাসের। ৮০ নম্বর ভৈরব ঘটক লেন ধরে বাড়ি ফেরার সময়ে স্তার উপর ঝুলে থাকা একটি বিদ্যুতের তারে তাঁর ছাতা ঠেকতেই ছিটকে পড়েন পূরবী। তরুণীর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার পর শুক্রবার সকাল থেকেই স্থানীয়দের একাংশ এলাকায় বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, ৮০ নম্বর ভৈরব ঘটক লেনে একটি বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। সেই বহুতলের মিটার থেকে অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুৎসংযোগ নেওয়া হচ্ছিল পার্শ্ববর্তী দোকানগুলিতে। এলাকার লোকেরা বার বার এ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু সে কথা শোনা হয়নি। এলাকার জলনিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy