পুকুরটি ২০০৯ সাল থেকে বোজানো শুরু হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। একবার বিধায়ক অসিত মজুমদারও সদলবলে গিয়ে হুমকির সুরে কোদালিয়া ২ পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর এলাকার ওই পুকুরটি পরিষ্কার করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। বর্তমানে সেটি ফের ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
স্থানীয়দের দাবি, ওই পুকুর হয়েই চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া ২ পঞ্চায়েতের ৯টি বুথ এবং হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪টি ওয়ার্ডের নিকাশির জল সরস্বতী নদীতে পড়ে। তাই বর্ষার আগে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফেরানো না গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা জলে ডোবার আশঙ্কায় চিন্তিত বাসিন্দারা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের পরিতোষ মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দা বিনয় চট্টোপাধ্যায় পুকুরটি ভরাট করছেন। সেখানে বেআইনি নির্মাণও করছেন।’’ বিষয়টি তিনি প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে জানিয়েছেন। কোনও কাজ না হওয়ায় সম্প্রতি চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমির দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পরিতোষের অভিযোগ, প্রায় এক একরের পুকুরটি পরিষ্কার করতে গেলে বাধা দেন বিনয়। বিনয় অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
অ্যাকাডেমির সভাপতি পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের খেদ, ‘‘চারিদিকে গাছ কাটা, পুকুর ভরাটের মতো বেআইনি কার্যকলাপ চলছে।’’ তাঁর অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রশাসন নির্বিকার। অবিলম্বে ওই পুকুর সংস্কারে পদক্ষেপ না করলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান। অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়ে হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধারা বলেন, ‘‘জলাশয় বোজানো কখনই কাম্য নয়। মহকুমাশাসক (সদর) বিষয়টি দেখছেন। প্রয়োজনে আমরাও হস্তক্ষেপ করব।’’
মহকুমাশাসক স্মিতা সান্যাল শুক্ল বলেন, ‘জলাশয়ের জমিটি দেখার দায়িত্ব ছিল আমার। কিন্তু বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় আমার
এক্তিয়ার নেই।’’
‘পুকুর’ শব্দে অবশ্য আপত্তি রয়েছে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী বিনয়ের। তিনি বলেন, ‘‘ওটি পুকুর কোনও দিনই ছিল না, ডোবা ছিল। আগে সেচের কাজে ওই ডোবা
ব্যবহৃত হত।’’
কিন্তু ডোবা হলেও কি তা
বোজানো যায়?
বিনয়ের জবাব, ‘‘এক গাড়ি মাটির দাম ৪ হাজার টাকা। অত টাকা খরচ করে ডোবা বুজিয়ে আমার লাভ কী?’’ তাঁর দাবি, তিনিই ওই জমির মালিক। পরিতোষের বক্তব্য, ‘‘জমির মালিক যে-ই হোন, পুকুরটি পুকুরের অবস্থায় ফিরিয়ে দিলেই হল’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)