সেদিন: দু’মাস আগে আনন্দের বাড়িতে লকেট। — ফাইল চিত্র।
মাস দুয়েক আগে চন্দননগরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এসে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপির কিছু নেতা-কর্মী মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন গোন্দলপাড়ার এক শ্রমিকের বাড়িতে। শ্রমিক পরিবারটির দাবি, যে কোনও সমস্যায় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ওই শ্রমিকের স্ত্রীর চিকিৎসার সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি বিজেপি নেতারা, এমনটাই অভিযোগ। রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তাঁর সহায় হল। ভদ্রেশ্বর পুর-কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় দ্রুত ওই কার্ড হাতে পায় পরিবারটি।
বিজেপি অভিযোগ মানেনি। তাঁদের পাল্টা দাবি, ওই পরিবারের তরফে অসুস্থতার কথা জানানোই হয়নি। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেটের দাবি, ‘‘মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগই করেননি। তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি হারিয়ে গিয়েছে। সেই জন্য এ সব করছে। কিন্তু এতেও ওরা মানুষের সহানুভূতি পাবে না।’’
পি আনন্দ রাও নামে ওই শ্রমিক কাজ করেন গোন্দলপাড়া জুটমিলে। দীর্ঘদিন মিল বন্ধ ছিল। ফলে, কষ্টেসৃষ্টে সংসার চালাতে হয়েছে। কয়েক মাস আগে মিল খুললেও অভাব পুরোপুরি ঘোচেনি।
গত ডিসেম্বরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে লকেট ছাড়াও আনন্দের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন দলের রাজ্য নেতা দীপাঞ্জন গুহ, হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্ট্যোপাধ্যায়রা। আনন্দের স্ত্রী পি লতা রাও তাঁদের খাবার পরিবেশন করেন। সেই সব ছবি তোলা হয়। রান্নার প্রশংসা করেন বিজেপি নেতারা। পরিবারটির পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন।
বছর তেতাল্লিশের লতা সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষা করে জানা যায়, পেটে টিউমার রয়েছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারের খরচ নিয়ে চিন্তায় পড়েন আনন্দ। তাঁর দাবি, বিজেপি নেতাদের প্রতিশ্রুতির কথা ভেবে তিনি ওই দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোযাযোগ করেন। কিন্তু সাহায্য মেলেনি। অনেক চেষ্টা করেও লকেটের নাগাল পাননি।
আনন্দদের বাড়ির পাশেই ভদ্রেশ্বর পুর-এলাকা। বিষয়টি জেনে সেখানকার তৃণমূলের বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী হস্তক্ষেপ করেন। তাঁর তৎপরতায় তড়িঘড়ি রাও পরিবারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তৈরি করা হয়। গত সোমবার লতা ভদ্রেশ্বর পুরসভা পরিচালিত অঙ্কুর হাসপাতালে ভর্তি হন। বুধবার অস্ত্রোপচার হয়। পুরো চিকিৎসাই হয়েছে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের মাধ্যমে। নিখরচায়। লতা বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। ভেবেছিলাম সাংসদ বা ওঁদের লোকেরা সাহায্য করবেন। কিন্তু লাভ হয়নি। ভাগ্যিস প্রকাশবাবু তৎপর হয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে দিলেন।
এখন আমি সুস্থ।’’ আনন্দের কথায়, ‘‘বিজেপি নেতারা প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় মনে বল পেয়েছিলাম। বাস্তবে অন্য অভিজ্ঞতা হল।’’
প্রকাশ বলেন, ‘‘বিজেপির সবটাই লোকদেখানো। তা-ও শুধু ভোটের সময়।’’ পক্ষান্তরে, বিজেপির চন্দননগর মণ্ডলের সভাপতি বিনোদ দাসের দাবি, ‘‘ওই পরিবারটি
মিথ্যা বলছে। অসুস্থতার ব্যাপারে ওঁরা আমাদের কিছুই জানাননি।’’ একই দাবি চন্দননগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর শশীপ্রভা চৌধুরীরও। গোন্দলপাড়া ওই ওয়ার্ডেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy