বিকাশবাবুর মনোনয়ন ঘিরে ‘টেকনিক্যাল’ জটিলতা।
রাজ্যসভার ষষ্ঠ আসন নিয়ে এত দিন চলছিল রাজনৈতিক টানাটানি। শেষ লগ্নে টানাটানি শুরু হল মনোনয়ন নিয়ে! ঠিক সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ নথিপত্র জমা দিতে পারেননি, এই কারণে বাতিল হওয়ার পথে সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের মনোনয়ন! সিপিএমও পাল্টা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আজ, শনিবার স্ক্রুটিনিতে। শেষ পর্যন্ত বিকাশবাবুর মনোনয়ন বাতিল হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হবেন বাকি ৬ প্রার্থী।
বিদায়ী সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যকেই ষষ্ঠ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে বৃহস্পতিবার বার্তা পাঠিয়েছিলেন এআইসিসি নেতৃত্ব। রাতে সিপিএম ঠিক করে, তারাও ওই আসনে প্রার্থী দেবে। আলিমুদ্দিনে শুক্রবার সকালে বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং আইনজীবী বিকাশবাবুর নাম ঘোষণা করেন বিমান বসু। তখন মনোনয়ন জমা শেষ হতে বাকি আর কয়েক ঘণ্টা! তড়িঘড়ি কাগজপত্র তৈরি করে মনোনয়ন পেশ করতে দৌড়ন বিকাশবাবু। এবং সেখানেই বিপত্তি!
কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী এ দিন বেলা তিনটের মধ্যে রাজ্যসভার প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করতে হতো। কিন্তু বিকাশবাবুর অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিতে তিনটে বেজে দু’মিনিট হয়ে যায় বলে বিধানসভার সচিবালয়ের দাবি! আর বিকাশবাবুর সঙ্গী বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং সিপিএমের রাজ্য নেতা রবীন দেবের পাল্টা দাবি, তাঁদের ঘ়়ড়িতে তখন দু’টো ৫৮! দু’মিনিটের এই বিতর্কে কমিশনের হস্তক্ষেপ চান বিধানসভার সচিব জয়ন্ত কোলে। পদাধিকার বলে তিনিই রাজ্যসভা নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার।
বিধানসভায় সচিবের ঘরে রাত পর্যন্ত আলোচনা চালান সুজনবাবু ও রবীনবাবু। রাতে সুজনবাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও লিখিত নির্দেশ পাইনি। অতিরিক্ত হলফনামা যে অপরিহার্য নয়, এই নিয়ে আমরা কমিশনে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন বাতিল করা হলে ধরে নিতে হবে, কোনও জটিলতার শিকার করে দেওয়া হল আমাদের!’’
আরও পড়ুন: প্রদীপের পাশে মমতা, প্রার্থী দিচ্ছে সিপিএমও
নানা মহলে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, বিকাশবাবুর মনোনয়ন ঘিরে এই ‘টেকনিক্যাল’ জটিলতা কি নেহাতই ঘটনাচক্র? নাকি এর পিছনে কোনও কৌশল আছে? প্রকাশ কারাটের ফরমান মেনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েও আসলে প্রদীপবাবুর জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করে দিতে এই কৌশল আলিমুদ্দিন নিয়েছে কি না, প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।
এ সবের আগে প্রদীপবাবু অবশ্য নির্বিঘ্নেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বাম আর কংগ্রেসের মধ্যে ফাটল তৈরির সুযোগ দু’হাতে লুফে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিধানসভায় স্পিকারের ঘরে এ দিন তিনি কথা বলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও প্রার্থী প্রদীপবাবুর সঙ্গে। পরে মমতার মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস তো বলেছিল সিপিএমের কে এক জন প্রার্থী হবে দিল্লি থেকে, তাকে সমর্থন করবে! ওরা তো তা মানেনি! ওরা যখন দিতে পারেনি, তখন কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেস যখন প্রার্থী দিয়েছে, তখন কথা রাখা উচিত ছিল। এটা ঠিক হয়নি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy