অর্চনা মজুমদার। বৃহস্পতিবার নদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
আর জি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, তরুণী চিকিৎসকের শরীরে যে ধরনের এবং যত আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, ততটা কি একা সঞ্জয় রায়ের পক্ষে করা সম্ভব? এ বারে সেই সন্দেহই নতুন করে উস্কে দিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য এবং পেশায় চিকিৎসক অর্চনা মজুমদার। নির্যাতিতার দেহে যত আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তাতে সঞ্জয় রায়ের একার ‘হাত’ ছিল না বলেই মনে করছেন তিনি। এই মামলায় অবশ্য সিবিআই এখনও পর্যন্ত শুধু সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেই চার্জশিট পেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার নদিয়ার কল্যাণী ও কৃষ্ণনগর সংশোধনাগারে গিয়ে মহিলা আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে সংবাদমাধ্যমকে অর্চনা বলেন, “যেখানে সিবিআইয়ের মতো একটি সংস্থা তদন্ত করছে, সেখানে কিছু আন্দাজ করা ঠিক নয়। তবু ওই তরুণী চিকিৎসকের যে শারীরিক শক্তি ছিল এবং নিজের কর্মস্থলে কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁকে যে ভাবে আঘাত করা হয়, যাতে তাঁর শরীরে নানা জায়গায় চিড় ধরেছে, চোখ-নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে, তা একা সঞ্জয় রায়ের পক্ষে করা সম্ভব নয় বলেই এক জন চিকিৎসক হিসাবে আমি মনে করি।”
কয়েক বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্যে দলের অন্যতম মুখপাত্র হন অর্চনা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দমদম উত্তরে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে হারেন। বছর তিনেক বসিরহাট জেলা বিজেপির ইনচার্জ ছিলেন। সন্দেশখালি পর্বেও অর্চনাকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি তিনি জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য হয়েছেন।
অর্চনার দাবি, “আর জি করের নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাড়াতাড়ি। ময়না তদন্ত বা ফরেন্সিক রিপোর্টেও গাফিলতি হয়। অপরাধের জায়গা ভেঙে দেওয়া হয়, ১৪ অগস্ট রাতে ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনাগুলি প্রমাণ করে, সঞ্জয় একা নয়, সেখানে আর যারা ছিল, তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী।” তাঁর মতে, “মেয়েটিকে যে মরতে হয়েছে তার কারণ কিন্তু দুর্নীতি।” জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন বার বার এই প্রশ্নগুলিই তুলেছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও। সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরের সামনে বার বার বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে।
তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান পাল্টা দাবি করেন, “উনি যদি জানেনই যে অনেকে ছিল, তা হলে সিবিআই-কে কেন বলছেন না? সিবিআই তো ওঁদের হাতে। বাকিদের ধরা হচ্ছে না কেন? আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই এ সব বলা হচ্ছে।” তবে অর্চনার বক্তব্য, “সিবিআই যে সব কল রেকর্ড পেয়েছে, সেগুলি থেকে ওরা নিশ্চয় একটা সিদ্ধান্তে আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy