বাম ছাত্র সংগঠনের মিছিল। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ে শীর্ষ পদে বদল করার কথা ভাবছে সিপিএম। দলীয় সূত্রে খবর, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য এবং সভাপতি প্রতীক-উর রহমান— দু’জনেই ছাত্র ফ্র্যাকশন কমিটির বৈঠকে জানিয়েছেন, তাঁরাও পদ ছেড়ে নতুনদের জায়গা করে দিতে চান।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছাত্র সংগঠন দেখার দায়িত্বে রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। গত বৃহস্পতিবার ছাত্র ফ্র্যাকশন কমিটির বৈঠক ছিল। সূত্রের খবর, সেখানে সুজনের উপস্থিতিতেই সৃজন এবং প্রতীক-উর জানিয়েছেন, তাঁরা রাজ্যের ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব ছাড়তে চান। সিপিএম সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ১৫ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলনের মধ্যে দিয়েই এই রদবদল করা হবে। অর্থাৎ, লোকসভা ভোটের আগেই এই বদল সেরে ফেলতে চাইছে সিপিএম। তবে কোন জেলায় এ বার ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন হবে, তা এখনও স্থির হয়নি।
সৃজন এবং প্রতীক-উর দু’জনেই সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য। এর পর তাঁরা কোন গণসংগঠনে যুক্ত হবেন, তা দল ঠিক করে দেবে। বাম ছাত্র-যুব সংগঠনে নিয়ম— প্রতিটি স্তরে দু’বছর অন্তর সম্মেলন করে নতুন কমিটি ও নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। আগামী সেপ্টেম্বরে এসএফআইয়ের বর্তমান রাজ্য কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পুজোর আগে সম্মেলন করা যাবে না। তাই তা জানুয়ারিতে করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
সৃজন এবং প্রতীক-উর চার বছর রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতি পদে রয়েছেন। স্বাভাবিক নিয়মেই এ বার তাঁদের দায়িত্ব ছাড়তে হবে বলে জানা গিয়েছে। এখন কৌতূহলের বিষয় হল, এই দায়িত্বে নতুন কারা আসবেন। সিপিএম সূত্রে খবর, পরবর্তী রাজ্য সম্পাদক হিসাবে জোরালো ভাবে নাম রয়েছে দেবাঞ্জন দে-র। তিনি এখন কলকাতা জেলা এসএফআইয়ের সভাপতি। অল্পবিস্তর নাম ভাসছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ছাত্রনেতা ঋজুরেখ দাশগুপ্তেরও। তিনি আবার দলে শমীক লাহিড়ীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সভাপতি হিসাবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার ছাত্রনেতা আকাশ করের নাম। তিনি অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী করের ছেলে। অন্য দিকে বর্ধমানের ছাত্রনেতা অনির্বাণ রায়চৌধুরীর নামও রয়েছ। অনির্বাণ বর্ধমানের আন্দোলন থেকে গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছিলেন। এখন দেখার, কোন কোন নতুন মুখকে দায়িত্বে আনে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
বামপন্থী রাজনীতি তো বটেই, কমবেশি সব রাজনৈতিক দলেই নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব উঠে আসার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকে ছাত্র সংগঠনের। রাজ্যে সাড়ে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে তা হারানোর পর, সিপিএমের পরিষদীয় শক্তি ১০ বছরের মধ্যেই শূন্যে গিয়ে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে দলকে নতুন করে সংসদীয় ও সংসদ-বহির্ভূত লড়াইয়ে ফেরাতে নতুন নেতৃত্ব এবং কর্মীবাহিনী গড়ে তোলার উপরে জোর দিচ্ছে সিপিএম। সে দিক থেকেও, ছাত্র সংগঠনের নতুন নেতৃত্বের ভূমিকা তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সিপিএম এই গুরুত্বের জায়গা থেকেই এসএফআইয়ের আগামী রাজ্য সম্মেলন এবং নতুন নেতৃত্বের নির্বাচনকে দেখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy