ছবি: পিটিআই।
মাস তিনেক পরে বাবাজীবন ঘরে এসেছিলেন বটে, তবে চৌকাঠে পা রাখতেই সেই চেনা ছবিটা যেন ঠোক্কর খেল! হাত দেড়েক ঘোমটা টেনে শাশুড়ির চায়ের পেয়ালা হাতে খাতির দূরের কথা, বদলে উড়ে এল—‘‘উঁহু, এক পা-ও নয়, আগে বাপু গাঁয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটা ঘুরে এস!’’
কেরলে কাজ করেন, ছ’মাসে ন’মাসে এক বার দেশের বাড়িতে পা রাখলে, অনুপনগরে শ্বশুরবাড়ির তল্লাটে মুখ দেখানোটা তাঁর রীতি। আর প্রবাসী জামাই ঘরে এলেই তাঁকে খুশি করতে কী যে করবেন তা বুঝতেই পারেন না শাশুড়ি! তাঁর মুখেই কি না এমন ফতোয়া?
প্রথমে হকচকিয়ে, ‘‘কই আমার তো কিছু হয়নি’’ বললেও গোসা কম হয়নি বাবাজীবনের। শাশুড়ি অনড়, হাসপাতাল ঘুরে, ডাক্তারের ফিট সার্টিফিকেট আনলে প্রবেশাধিকার— ‘‘না বাবা, কেরল থেকে এসেছ কিনা, আগে ডাক্তার দেখিয়ে এস, না হলে ঘরে যদি রোগবালাই সেঁদিয়ে যায়!’’
আরও পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিক, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা স্থগিত
জামাই জানান, ‘‘যাব না হাসপাতাল, আমি কি অসুস্থ?’’ শাশুড়িরও এক গোঁ, আগে হাসপাতাল, তার পরে ‘খাতির যত্ন’! জামাইয়ের ‘বেয়াদপি’ দেখে এ বার ঘরে ঢুকে সটান পুলিশকে ফোন করে বসেন শাশুড়ি। পুলিশ আসছে শুনে খিড়কি দিয়ে পালাতে গিয়ে বাবাজীবন পা পিছলে একেবারে পুকুরে। ধুলো উড়িয়ে শমসেরগঞ্জ থানার জিপ ঘাটে ভিড়েই ভেজা জামাইকে পাঁজাকোলা করে তুলে একেবারে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
শাশুড়ি বলছেন, ‘‘জামাই বাবাজীবন বাড়ি এলে কার না আনন্দ হয়, সে আমাদের পরম আপনজন, তা বলে রোগ তো আপন নয়! তাই একটু হাসপাতালে পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলেছিলাম। তা বেঁকে বসল সে!’’
অনুপনগর হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেন বলছেন, ‘‘এমন সতর্ক শাশুড়ি সকলের হয় না কেন!’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবাজীবনের রক্ত পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস না মিললেও চিকিৎসকেরা তাঁকে ১৪ দিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy