Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Satyajit Biswas Murder Case

বিধায়ক খুনে দোষী সাব্যস্ত দুই, বেকসুর খালাস তিন, ‘বিচার পেলাম কই!’ আক্ষেপ সত্যজিতের স্ত্রীর

২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছে একটি স্কুলের মাঠে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস।

সত্যজিৎ বিশ্বাস।

সত্যজিৎ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১০
Share: Save:

কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যা মামলায় দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করল বিধাননগরের ময়ূখ ভবনের বিশেষ আদালত। তিন জনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার এই রায় শোনান বিচারক জয়শঙ্কর রায়। আদালতের রায় শুনে হতাশ বিধায়ক-পত্নী রূপালি বিশ্বাস। তাঁর আক্ষেপ, “এতদিন বিশ্বাস রেখেছিলাম, কিন্তু বিচার পেলাম কই!” দুই দোষীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আদালতের রায়ের পর নদিয়ার তেহট্টে বাপের বাড়ি পৌঁছে রূপালি বলেন, “আমার স্থির বিশ্বাস ছিল প্রত্যেক অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হবে। আইনব্যবস্থার প্রতি আমার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি আমার স্বামীর খুনিরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে।” তিনি আরও বলেন, “আমার স্বামী তো কোন দোষ করেনি। ও পরোপকারী। মানুষের সমস্যা নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকত। এলাকার মানুষও আমার স্বামীর উপর ভরসা করত। তবে কেন কাছের মানুষগুলো আমার স্বামীর সঙ্গে এমনটা করল। তাদের তো সব সময় আমাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। তারাই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমাদের ঠিক বাড়ির পাশের স্কুল মাঠে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমার স্বামীকে নৃশংস ভাবে গুলি করে খুন করল। আমার কোলের ছোট্ট ছেলেটি জানতেও পারল না তার বাবা আর বেঁচে নেই। মুখে কথা ফোটার আগেই পিতৃহারা হল।”

আদালতের রায় নিয়ে নিহত বিধায়কের স্ত্রী বলেন, “আইনের উপর আস্থা রাখছি। ওঁদের যেন ফাঁসি হয়। তা হলে আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে। আর যদি যাবজ্জীবন জেল খেটে বাড়ি ফিরে জনসমাজে ঘুরে বেড়ায় সেটা আমার পক্ষে খুব কষ্টের হবে। সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে, প্রথম দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে আছেন, আমিও তাঁর একজন সৈনিক হিসেবে পাশে আছি। থাকব।”

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছে একটি স্কুলের মাঠে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ। প্রথমে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। ধৃত সুজিত মণ্ডল, অভিজিৎ পুণ্ডরি এবং নির্মল ঘোষের নামে খুনের অভিযোগ আনা হয়। খুনের ঘটনায় তৎকালীন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নামও উঠে আসে। প্রথমে রানাঘাটে এডিজি আদালতে শুনানি শুরু হলেও ২০২১ সালে মামলা স্থানান্তরিত হয়ে বিধাননগর এমপি এমএলএ আদালত আসে। বুধবার জগন্নাথ সরকার, নির্মল ঘোষ ও মুকুল রায়কে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত। বাকি দু’জন সুজিত মণ্ডল এবং অভিজিৎ পুণ্ডরিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের সাজা ঘোষণা। আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে বিধায়কের স্ত্রী-সহ গোটা পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE