Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Supreme Court of India

অতিরিক্ত মহিলা নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হবে হাসপাতালে, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিল রাজ্য

মঙ্গলবার আরজি কর-কাণ্ডের শুনানি চলাকালীন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে অতিরিক্ত ১,৫১৪ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের কথা জানিয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪০
Share: Save:

রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে অতিরিক্ত মহিলা নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হবে বলে জানাল রাজ্য। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে হলফনামা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা নিয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। তার পরেই হলফনামা দিল রাজ্য।

মঙ্গলবার আরজি কর-কাণ্ডের শুনানি চলাকালীন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে অতিরিক্ত ১,৫১৪ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের কথা জানিয়েছিল। চুক্তির ভিত্তিতে ওই সব কর্মীদের নেওয়া হবে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাত্রি সাথী’। এই প্রকল্পে এক বছরের জন্য বাইরের একটি সংস্থাকে বেছে নিয়েছে রাজ্য। এর পর বুধবার তারা সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাল, ৯১০ জন অতিরিক্ত মহিলা নিরাপত্তাকর্মীকে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে মোতায়েন করা হবে। পুলিশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে ওই মহিলা নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

প্রধান বিচারপতি মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণে প্রশ্ন তোলেন, হাসপাতালের নিরাপত্তায় কেন চুক্তিভিত্তিক কর্মী? অভিযুক্তও এক জন অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। মাত্র সাত দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কী ভাবে নিশ্চিত নিরাপত্তা দেওয়ার আশা করা হয়? রাজ্য বলছে, তারা বাইরের নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের দায়িত্ব দেবে। তাদের দায়িত্ব দেওয়ার আগে ওই সব কর্মীর মানসিক অবস্থা দেখেছেন? এটা কোনও প্রশ্ন নয়। মূল সমস্যা হচ্ছে নিরাপত্তার দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মী কেন? কেন রাজ্য এমন পদক্ষেপ করছে? তিনি আরও বলেন ‘‘অভিযুক্তএকজন সিভিক ভলান্টিয়ার। নিরাপত্তার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি তো! নিরাপত্তার অভাব ছিল বলেই তো ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সারা হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। আবার নিরাপত্তার দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মী রাখবেন? যেখানে সব সময় কাজ চলছে, ডাক্তারেরা ৩৬ ঘণ্টা কাজ করছেন, সেখানে এমন নিরাপত্তা কেন?’’

প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের মুখে রাজ্যের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। ‘রাত্রি সাথী’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। প্রধান বিচারপতি পাল্টা বলেন, ‘‘চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে তাঁদের কাছ থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করেন?’’ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের এ বিষয়ে ভাবা উচিত। কী ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারে রাজ্য?’’

হাসপাতালগুলিতে নিদেন পক্ষে পুলিশ রাখার পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা, সরকারি হাসপাতালগুলির পরিসংখ্যান এবং সেখানে কমবয়সি মহিলাদের কাজের বিষয় উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘২৮টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে রাজ্যে। আরও ১৭টি হাসপাতাল সরকারের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে ১৮-২৩ বছরের তরুণীরা কাজ করেন। তাঁদের নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হলে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। সরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে পুলিশকর্মী রাখা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE