Advertisement
E-Paper

মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ, যাচ্ছেন রাজ্যের ডিজিপি-ও

রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় অশান্তির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার মামলার শুনানি হল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে।

মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।

মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৩৭
Share
Save

মুর্শিদাবাদের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় অশান্তির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার মামলার শুনানি হল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। ওই মামলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

রাজ্যের চারটি জেলা (মুর্শিদাবাদ, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা)-র কিছু অংশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানান শুভেন্দু। রাজ্যের আইনজীবী শুরুতে তাতে আপত্তি জানান। হাই কোর্টে রাজ্য জানায়, পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর থেকেও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলে আপত্তি কোথায়, তা জানতে চায় আদালত।

শুনানির একটি পর্যায়ে বিচারপতি সেন রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হলে অসুবিধা কোথায়? রাজ্যের ক্ষমতায় তারা (কেন্দ্রীয় বাহিনী) হস্তক্ষেপ করবে না। শুধুমাত্র পুলিশকে সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। অতীতে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত মামলা এবং আরও বেশ কিছু মামলায় যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা-ও স্মরণ করায় আদালত।

ওয়াকফ আইন (সংশোধনী)-র বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরে মুর্শিদাবাদ-সহ বেশ কিছু জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘটেছে। মুর্শিদাবাদের কিছু এলাকায় অশান্তিও ছড়িয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে ‘খণ্ডযুদ্ধে’র চিত্র ধরা পড়েছে এই গোলমালের সময়ে। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘(পরিস্থিতি) চরম পর্যায়ে গেলে আমরাও (পুলিশ) কঠোর এবং কঠিনতম পদক্ষেপ করব। গুন্ডামি বরদাস্ত করব না।’’ সাধারণ মানুষ যাতে আইন নিজের হাতে তুলে না নেন, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। বেসরকারি সূত্রে খবর, বিভিন্ন ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।

আদালতের প্রশ্নে রাজ্যের আইনজীবী অর্ক নাগ জানান, এখনও পর্যন্ত ১৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এডিজি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক দায়িত্বে রয়েছেন। নতুন করে কোনও উত্তেজনা দেখা দেয়নি বলেও আদালতে জানান তিনি। তবে আদালতের প্রশ্ন, যেখানে বিএসএফ-এর সাহায্য চাওয়া হয়েছে, তখন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে আপত্তি জানানো হচ্ছে কেন? রাজ্য কী করবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ৩০ মিনিট সময়ও দেয় বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ।

৩০ মিনিট পরে ফের এজলাস বসতে শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতে জানান, এখনও বোমাবাজি হচ্ছে। আইনজীবীর বক্তব্য, রাজ্য আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। রাজ্যের প্রতি আস্থা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান রাজ্যের আইনজীবী। আদালত তখন মৌখিক ভাবে জানায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধুমাত্র পুলিশকে সাহায্য করবে। ডিভিশন বেঞ্চ এ-ও জানায়, পুলিশ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা হচ্ছে না। পুলিশ অদক্ষ বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে না, এমন কিছুই বলা হচ্ছে না। কিন্তু বড় কোনও ঘটনা ঘটে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে। মামলার শুনানিতে একটি পর্যায়ে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের কথাও তুলে ধরেন শুভেন্দুর আইনজীবী।

শুনানির দ্বিতীয়ার্ধে ভার্চুয়ালি শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হাই কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চে জানান, ৬ কোম্পানি বিএসএফ এবং এক হাজার পুলিশকর্মী এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন। পুলিশের আইজি, ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিকেরা এলাকায় রয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছেন। শুভেন্দুরা যে অভিযোগগুলি করছেন, তা অস্পষ্ট বলে দাবি রাজ্যের আইনজীবীর। কল্যাণের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মামলাটি করা হয়েছে। তিনি জানান, পুলিশ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই করছে।

সংক্ষেপে
  • সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আবহে গত শুক্রবার অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ কিছু অঞ্চলে।
  • মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনার তদন্তে বুধবার ২০ সদস্যের সিট গঠন করে রাজ্য পুলিশ।
Calcutta High Court central force

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}