শমীক, অনিন্দ্য এবং দেবলীনা —ফাইল চিত্র।
গোরুর মাংস খাওয়া নিয়ে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়দের পরোক্ষে হুঁশিয়ারিই দিয়ে রাখল বিজেপি। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘ওঁরা মানুষের আবেগে আঘাত করছেন। এর পরে যদি ওঁরা জনরোষের শিকার হন তাঁর দায় বিজেপি নিতে পারবে না।’’ এর পরে আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেবলীনা বলেন, ‘‘ঠিক আছে। দায়িত্ব নিতে হবে না। ওঁরা দায়িত্ব না নিলে সাইবার ক্রাইম বিভাগ নেবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত সাম্প্রতিক একটা টক শো। সেখানে দেবলীনা রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করার সময় গায়ক ও পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের কথার সূত্র ধরে জানান, নিরামিষভোজী হলেও প্রয়োজনে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নবমীর দিন দেবলীনা গরুর মাংস রান্না করে দিতে পারেন। তিনি মনে করেন, খাদ্য, খাদ্যাভাস এবং ধর্ম বিষয়ে তিনি এতটাই ছূৎমার্গহীন। সে দিনের পর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় অশ্লীল আক্রমণ শুরু হয়। ‘রেপ থ্রেট, মাথা কেটে ফেলার হুমকি, গণধর্ষণ, প্রকাশ্যে চাবকানো, নগ্ন করে নাচানো’ এমন সব হুমকি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করেছেন দেবলীনা।
দেবলীনার বিরুদ্ধে এমন ‘নোংরা’ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই এর পিছনে বিজেপি তথা বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার তরুণজ্যোতি তেওয়ারি নামে বিজেপি-র এক কর্মী বাগুইহাটি থানায় এফআইআর করেন। তিনি লেখেন, ‘‘আমি কলকাতা হাইকোর্টে নিয়মিত প্র্যাকটিস করি। আমি একজন শান্তিপ্রিয় নাগরিক। হিন্দু দেবী দুর্গার উপাসক। গরুকে পুজো করি। গরুকে যে কাটবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবিধানের ৪৮ ধারায় নির্দেশ আছে। এই ধারা মেনে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে গরু খাওয়া বন্ধ হলেও পশ্চিমবঙ্গে হয়নি।’’
এই মামলা বা বক্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে আক্রমণ চলছে তাতেও দলের সংযোগ নেই দাবি করে বিজেপি মুখপাত্র শমীক বলেন, ‘‘কে কী খাবে, কী রান্না করবে তা নিয়ে বিজেপি-র কিছু যায় আসে না। আমরা কারও রান্নাঘরে উঁকি মারতেও চাই না। কিন্তু কারও ভাবাবেগে আঘাত করাকেও আমরা সমর্থন করি না।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা প্রকাশ্যে দুর্গাপুজোয় গোমাংস খাওয়া নিয়ে মন্তব্য করেছেন তাঁদের ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে মত প্রকাশের অধিকার আছে। একই ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধবাদীদেরও বিপরীত মত প্রকাশের অধিকার আছে।’’
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ নিয়ে কি রাজনীতি চাইছে বিজেপি? শমীকের দাবি, ‘‘বিজেপি ভোটের রাজনীতি করে না। দলের অনেক কাজ আছে। আমি শুধু বলছি, কারও আবেগে আঘাত লাগলে জনরোষ হতে পারে। তার দায় বিজেপি নেবে না।’’ এটা কি এক প্রকার হুঁশিয়ারি নয়? শমীকের বক্তব্য, ‘‘আমরা খালি বলে রাখছি, প্রকাশ্যে এই ধরনের মন্তব্য করলে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। আগে থাকতে বলে রাখছি, সেই প্রতিক্রিয়া হলে যেন বিজেপি-র ঘাড়ে দোষ চাপানো না হয়।’’ আর যদি সত্যিই কোনও জনরোষ তৈরি হয় তবে কি বিজেপি সেটা সমর্থন করবে? শমীক বলেন, ‘‘বিজেপি দর্শকের ভূমিকায় থাকবে। দেখবে যেন সেই জনরোষের প্রকাশ শান্তিপূর্ণ হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy