নদিয়ার গাজন উৎসবে তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষেরা শিবমন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, তফসিলিরা মন্দিরে ঢুকতে যাতে কোনও রকম বাধা না পান, নিশ্চিত করবেন নদিয়ার জেলা আদালতের বিচারক। প্রসঙ্গত, পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের ডাকে দফায় দফায় বৈঠকে সমস্যা মেটার পর বৃহস্পতিবার নদিয়ার বৈরামপুরের ওই শিবমন্দিরে পুজো দিয়েছিল তফসিলি জাতিভুক্ত পাঁচ পরিবার।
গাজন উৎসবে তাঁদের মন্দিরে প্রবেশ এবং সন্ন্যাসী হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তফসিলি সম্প্রদায়ের লোকেরা। সেই মামলায় উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এমন বৈষম্যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। এই পরিস্থিতির জন্য পুলিশকেও ধমক দেওয়া হয়েছিল। ওই মামলায় রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল উচ্চ আদালত। শুক্রবার আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে পুলিশ। রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনে পুলিশ-প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। সেখানে আর কোনও সমস্যা নেই।
এর পরেই হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দেন, কালীগঞ্জ থানার অন্তর্গত ওই শিবমন্দিরের গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন জেলা আদালতের বিচারক। ধোপা সম্প্রদায়ের লোকেরা গাজন উৎসবে যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের কোনও রকম বাধা দেওয়া যাবে না। উৎসব শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি তিন দিন অন্তর বিচারককে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দেবে পুলিশ। কোনও রকম অশান্তি তৈরি হলে জেলা পুলিশ সুপারকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিতে পারবেন ওই বিচারক। আদালত জানায়, ওই উৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে স্থানীয় পুলিশকে। বিচারক মনে করলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশও দিতে পারবেন।
শিবমন্দিরে দাস সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি শোরগোল পড়েছিল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার গীধগ্রামেও। কয়েক দিনের চাপানউতরের পর তার মীমাংসা হয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে পুজো দিয়েছেন দাস সম্প্রদায়ের পাঁচ জন। এ বার মীমাংসা হল বৈরামপুরের শিবমন্দিরেও।