তাঁর বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে অনাস্থা এনেছেন দলেরই সাত সদস্য। তার পরে এ বার তৃণমূলের দুই নেতা ও অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা চার পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে হেনস্থা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন বর্ধমানের বড়শূল ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের মহিলা প্রধান। সিজেএম আদালতে বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আইনজীবী কমল দত্ত জানান, অভিযোগের শুনানির পরে সিজেএম সেলিম আনসারি বর্ধমান থানাকে এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর প্রধানের বিরুদ্ধে বর্ধমান ২ বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন পঞ্চায়েতের ১০ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে ৭ জন। প্রধান অভিযোগ করেন, সে দিন তিনি নিজের ঘরে বসে কাজ করছিলেন। তখন তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিস, দলের স্থানীয় নেতা শেখ মহম্মদ মিরাজ এবং পঞ্চায়েতের চার সদস্য জগন্নাথ দত্ত, শেখ সওকত, মৌমিতা পোদ্দার ও লতিকা বেগম তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন। গোলাম জার্জিস গালিগালাজ করতে করতে তাঁর টেবিলে রাখা কাগজপত্র ছুঁড়ে ফেলেন। তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অফিসে উপস্থিত মানুষজন ও কর্মীদের সামনেই শ্লীলতাহানি করা হয়। অফিসের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে তিনি কোনওরকমে বেরিয়ে বাড়ি চলে যান। বিষয়টি বিডিও এবং বর্ধমান থানাকে জানালেও ঘটনায় প্রভাবশালী নেতা জড়িত থাকায় কেউ কোনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে প্রধানের দাবি।
প্রধান আরও অভিযোগ করেন, তাঁকে কোনও কাজ ঠিক মতো করতে দেওয়া হত না। চাপ দিয়ে নির্দেশ মেনে নানা অনৈতিক কাজ করতে বলা হত। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় রাস্তাঘাটে ও অফিসে হেনস্থা করা হতে। এমনকী, তাঁকে জোর করে প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হত।
অভিযুক্তেরা অবশ্য প্রধানের অভিযোগ মানতে চাননি। গোলাম জার্জিস দাবি করেন, “প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। তিনি তা থেকে বাঁচতেই আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।” তাঁর বক্তব্য, “হেনস্থার ঘটনা ৮ ডিসেম্বর ঘটলেও তিনি সে দিন বা তার পরের দিন আদালতের দ্বারস্ত হলেন না কেন? আশা করি, পুলিশ তদন্ত করে উপযুক্ত ঘটনা প্রকাশ করবে।” বর্ধমান ২ বিডিও কমলিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি এই ব্যপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। ওই প্রধানের সঙ্গে কথা বলব।” বর্ধমান থানাও অভিযোগ নিতে না চাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথ বৃহস্পতিবার বলেন, “আমি যতদূর খবর পেয়েছি, কোনও মামলা-মোকদ্দমা কেউ করেনি। অনাস্থা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। প্রধান ও তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি যাঁরা তুলেছেন, তাঁরা তাতে যোগ দেন। কাল ফের বৈঠক হবে। অনাস্থার ব্যাপারে একটি সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy