গোটা দশেক গ্রামের ভরসা একটি মাত্র হাইস্কুল। মোট ২০টি প্রাথমিক স্কুলের সব ছাত্রছাত্রীর চতুর্থ শ্রেণির পরে সেই স্কুলে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নানা স্তরে এলাকায় একটি বালিকা বিদ্যালয় তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন কাঁকসার মলানদিঘির বাসিন্দারা। অবশেষে স্কুল শিক্ষা দফতর সেখানে একটি জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয় গড়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বলে সর্বশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। স্কুল তৈরির জন্য একটি পরিবার জমিও দান করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
কাঁকসা ব্লকের মলানদিঘি এলাকায় একমাত্র হাইস্কুল ‘মলানদিঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দির’। মলানদিঘি ছাড়াও সরস্বতীগঞ্জ, শিবপুর, বিষ্টুপুর, হরিকি, আকন্দারা, রক্ষিতপুর, লোহাগুড়ি, চুয়া, কুলডিহা, রূপগঞ্জ ইত্যাদি এলাকার পড়ুয়াদের একমাত্র ভরসা এই স্কুলটি। কয়েক বছর আগে স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। প্রধান শিক্ষক তন্ময় চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে তাঁদের স্কুলে মোট পড়ুয়া ১০১৫ জন। তার মধ্যে ৫০৫ জনই ছাত্রী। তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক চালুর পরে স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। আমাদের স্কুলে যত ছাত্রী রয়েছে, অনেক স্কুলে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা তত নয়। ছাত্রীদের জন্য আলাদা স্কুল হলে আমাদের স্কুলে পড়ুয়ার চাপ অনেকটা কমবে। তাতে পড়াশোনার মান বাড়বে। উপকৃত হবে পড়ুয়ারা।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পড়ুয়া সংখ্যা বাড়ছে। তাই এলাকায় অন্তত একটি বালিকা বিদ্যালয় গড়া খুব জরুরি। সেটি জুনিয়র হাইস্কুল হলেও সমস্যা অনেকটা মিটবে বলে তাঁদের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা স্থায়ী সমিতিতে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে এলাকায় একটি পৃথক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, ব্লক অফিস মারফত সেই প্রস্তাব পাঠানো হয় জেলাশাসক ও জেলা সর্বশিক্ষা দফতরে। জেলা সর্বশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসের শেষে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে মলানদিঘিতে একটি জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয় গড়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আগামি শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলটি চালু হয়ে যাবে।
মলানদিঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক তন্ময়বাবু দাবি করেন, পঠনপাঠন শুরু করতে কোনও সমস্যা হবে না। আপাতত তাঁদের স্কুলের পরিকাঠামো ব্যবহার করতে দিতে তাঁদের আপত্তি নেই। তন্ময়বাবু বলেন, “নতুন স্কুল গড়ার জন্য জায়গার অসুবিধা হবে না। স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অরূপ মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর দুই ভাই তারাচরণবাবু ও পার্বতীচরণবাবু স্কুল ভবন তৈরির জন্য ১৮ শতক জমি দান করেছেন। সেখানেই নতুন স্কুল গড়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy