Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পালাতে গিয়ে ফাটল না বোমা, গণপিটুনি

তখন সবে ব্যাঙ্কের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন জনাকয়েক গ্রাহক। আচমকা হৈ হৈ, ধস্তাধস্তি। জানা গেল, চোখ সরতেই কাউন্টার থেকে ফাঁক বুঝে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে ভেগে যাচ্ছিল দুই যুবক। গ্রাহকেরা বুঝতে পেরে এগোতেই ধস্তাধস্তি, হুটোপাটি শুরু হয়। ভিড় ছত্রভঙ্গ করে পালাতে ব্যাঙ্কের গেটের সামনে রাস্তায় বোমাও ছোড়ে ওই দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু বিধি বাম। বোমা না ফাটায় গণপিটুনিই জোটে দু’জনের।

গণপিটুনির পর জখম দুই দুষ্কৃতী। বর্ধমান মেডিক্যালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

গণপিটুনির পর জখম দুই দুষ্কৃতী। বর্ধমান মেডিক্যালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫৩
Share: Save:

তখন সবে ব্যাঙ্কের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন জনাকয়েক গ্রাহক। আচমকা হৈ হৈ, ধস্তাধস্তি। জানা গেল, চোখ সরতেই কাউন্টার থেকে ফাঁক বুঝে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে ভেগে যাচ্ছিল দুই যুবক। গ্রাহকেরা বুঝতে পেরে এগোতেই ধস্তাধস্তি, হুটোপাটি শুরু হয়। ভিড় ছত্রভঙ্গ করে পালাতে ব্যাঙ্কের গেটের সামনে রাস্তায় বোমাও ছোড়ে ওই দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু বিধি বাম। বোমা না ফাটায় গণপিটুনিই জোটে দু’জনের। পরে জানা যায়, ডাকাতদের সঙ্গের বন্দুকটিও ছিল পাখি মারার বন্দুক।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দেওয়ানদিঘি শাখায় ওই ঘটনা ঘটতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। ডাকাতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় ভোজালির ঘায়ে সন্দীপ বল নামে ওই ব্যাঙ্কের স্থানীয় এক গ্রাহক আহতও হন। পরে হারুন কুরেশি ও মিন্টু শেখ নামে ওই দুই দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশ। তবে গুরুতর জখম অবস্থায় দু’জনেই আপাতত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু’জনের বাড়ি শহরের নেড়োদিঘিতে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ১১টা নাগাদ ব্যাঙ্ক খোলার পরে গ্রাহকেরা সবে টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। আচমকা ক্যাশ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। হৈ চৈ শুরু হতেই ভোজালি বের করে তারা। টাকার ব্যাগ নিয়ে গেটের দিকে এগোতেও শুরু করে। একজনের হাতে বন্দুকও দেখা যায়। সাহসে ভর করে কয়েকজন গ্রাহক এগিয়ে এলে হাতাহাতি বাধে। দু’এক জনের গায়ে ভোজালির ঘা-ও লাগে। ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কে ডাকাতির খবর পেয়ে আশপাশের ব্যাবসায়ী, বাসিন্দারাও জড়ো হতে শুরু করেন। গতিক ভাল নয় বুঝে বোমা মেরে ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে চায় ওই দুই দুষ্কৃতীরা। কিন্তু বোমা ফাটে না। মুহূর্তেই ওই দু’জনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে জনতা। শুরু হয় গণপিটুনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার ও বর্ধমানের এসডিপিও কার্তিক মণ্ডল। জনতা ওই দুই ডাকাতকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ব্যাঙ্কে ড্রাফ্ট তৈরি করাতে এসেছিলেন দেওয়ানদিঘিরই বাসিন্দা সুরেশ শর্মা। তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কের ভেতর হুড়োহুড়ি শুরু হওয়াতে প্রথমে ভয় পেয়ে যাই। তারপরে ডাকাতদের সঙ্গে গ্রাহকদের ধস্তাধস্তি দেখে ব্যাঙ্কের বাইরে বের হয়ে আসি। পরে দেখি ওদের সঙ্গে থাকা বন্দুকটি আসলে পাখি মারার বন্দুক।” ব্যাঙ্কের ওই শাখার ম্যানেজার কে পি সরকার বলেন, “আমাদের শাখায় এই ধরনের ঘটনা কোনওদিনই ঘটেনি। যেভাবে প্রকাশ্যে সেখানে ডাকাতির চেষ্টা হল তাতে আমরা আতঙ্কিত। তবে গ্রাহকেরা সাহস করে ওই ডাকাতদের ধরে না ফেললে টাকা খোয়া যেত।” পুলিশের দাবি, জেরায় হারুণ নামের ওই দুষ্কৃতী জানিয়েছে, সে দুবাইয়ে গাড়ি চালায়। ছুটিতে বাড়ি কয়েকদিন আগে বাড়ি আসে। মিন্টুই তাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাঙ্কে আসে। কিন্তু সে যে ডাকাতির চেষ্টা করবে তা নাকি ভাবতেও পারেনি হারুণ। তবে পুলিশের অনুমান, পরিকল্পনামাফিকই টাকা লুঠ করতে এসেছিল দু’জন।

পুরসভায় মনোনীত বিরোধী দলনেতা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা হলেন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। দুর্গাপুর পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা কানু মণ্ডলের মৃত্যুর পর থেকে ওই পদটি ফাঁকা ছিল। দু’বারের বিজয়ী কাউন্সিলর শিবশঙ্করবাবুকেই বিরোধী দলনেতা হিসাবে মনোনীত করে সিপিএম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE