কেনা হল পছন্দের প্রতিমা। আসানসোল বাজারে। ছবি: শৈলেন সরকার
বাজার নেই। সরস্বতী ঠাকুর গড়ে তাই বিপাকে পড়েছেন বলে দাবি দুর্গাপুরের মৃৎশিল্পীদের।
ডিএসপি টাউনশিপের আর্টারিয়াল রোডের ধারে পরপর বেশ কয়েকটি ঠাকুর গড়ার কারখানা রয়েছে। সবগুলিতেই এখন সরস্বতী প্রতিমা গড়ার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। একটি কারখানার কর্মী ফটিক সূত্রধর জানান, প্রায় ৭৫টি প্রতিমা গড়া হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৬টির আগাম বায়না মিলেছে। বাকিগুলি বাজারে বিক্রি করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এক দিন পরে পুজো। একেবারে বাজার নেই।’’ বেনাচিতির ট্রাঙ্ক রোডের মৃৎশিল্পী সুজিতকুমার পাল জানান, ৮০টি প্রতিমা গড়েছেন। আগাম বায়না পেয়েছেন মাত্র তিনটির। হাতে আর এক দিন। তিনি বলেন, ‘‘অন্য বার আগেই সব ‘বুক’ হয়ে যায়। এ বার যে কি হবে জানি না!’’ একই কথা জানান গ্যামনব্রিজ এলাকার মৃৎশিল্পী ভুবন দে।
বেনাচিতিরই জেকে পাল লেনে কারখানা আছে মৃৎশিল্পী অরুণ পালের। তিনি আবার জানালেন, আগাম বরাত পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু দাম পাচ্ছেন না। নির্মাণ সামগ্রীর দাম গড়ে ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে। অথচ বিক্রির সময় ক্রেতারা বাড়তি দাম দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘এ বার লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে মনে হয়।’’
কেন এই পরিস্থিতি? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্লাবে পুজো করার উৎসাহ অনেক কমেছে। স্কুল এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগেই যেটুকু পুজো হচ্ছে। প্রতিমা যা বিক্রি, সেই সৌজন্যেই। কিন্তু সবথেকে বেশি প্রতিমা কিনে থাকে বিভিন্ন ক্লাব। মৃৎশিল্পীরা জানালেন, ক্লাবের পক্ষ থেকে একেবারেই বরাত মিলছে না। শেষ দিনে পরিস্থিতি আদৌ বদলাবে, এমন আশা তাঁরা করছেন না।
ক্লাবগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, নোট বাতিল কাণ্ডের জেরে এখনও অধিকাংশ মানুষ সংশয়ে রয়েছেন। এখনও অনেকের হাতে পর্যাপ্ত খুচরো নেই। কেউ থাকলেও কাছছাড়া করছেন না। ফলে চাঁদা উঠছে না। তাই কাটছাঁট করতে হচ্ছে। বি-জোনের একটি ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা রমেশ সূত্রধর বলেন, ‘‘আমরা গত ১০ বছর ধরে জাঁকজমক করে পুজো করছি। কিন্তু এ বার আর হবে না। কেউ দায়িত্ব নিতে চাইছেন না।’’ এ-জোনের একটি ক্লাবের পক্ষে সুমন্ত কোনার বলেন, ‘‘জাঁকজমকে ইতি টেনেছি আমরা। ছোট প্রতিমা দিয়ে কোনও রকমে পুজো সারছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy