কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা অব্যাহত। —নিজস্ব চিত্র।
আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন বনাম তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির দ্বন্দ্ব। প্রশাসনিক ভবনে অচলাবস্থা তৈরি করেছে ছাত্র সংগঠন। তাদের ওই আন্দোলনকে অনৈতিক আখ্যা দিয়েছে তৃণমূলেরই শিক্ষাবন্ধু সমিতি। দুই পক্ষের আন্দোলনের মাঝে মঙ্গলবার থমকে গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ভর্তি প্রক্রিয়া।
গত সাত দিন ধরে উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের দফতরে তালা দিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাদের অভিযোগ, ছাত্রভর্তির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের খাতে খরচ করা হয়েছে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে আইনি খরচ বাবদ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ওই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দিতে হবে। টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, কখন, কোথায়, কী কারণে এই টাকা খরচ করা হয়েছে— তা শ্বেতপত্র প্রকাশ করে উপাচার্যকে জানাতে হবে। বিক্ষোভ-অবস্থান শুরুর পর গত শুক্রবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন নিয়ামক চন্দন কোনার। কিন্তু পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট আটকে বিক্ষোভ দেখানোয় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই ঢুকতে পারেননি। মঙ্গলবারও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। টাকার হিসাব এবং টাকা ফেরতের দাবি জানায় টিএমসিপি। পঠনপাঠন চললেও তাদের এই আন্দোলনের জেরে প্রশাসনিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়।
অন্য দিকে, তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের এই আন্দোলনকে ‘বহিরাগতদের আন্দোলন’ বলে অভিহিত করে পাল্টা আন্দোলনে নামে তৃণমূলেরই শিক্ষাবন্ধু সমিতি। প্রশাসনিক ভবনের গেটের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসেন সমিতির সদস্যেরা। সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনৈতিক দাবি নিয়ে কিছু বহিরাগত ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, রেজিস্ট্রার-সহ মহিলা শিক্ষাকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে বিশ্ববিদ্যালয়কে কালিমালিপ্ত করতে দেব না। বিশ্ববিদ্যালয় এখন সুষ্ঠু ভাবে চলছে।’’ পাল্টা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আসানসোলের যাঁরা ভাল চান, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে তাঁদের এই আন্দোলন চলছে। আর দল ঠিক করবে কারা প্রকৃত তৃণমূল।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে এই অচলাবস্থার মধ্যে সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামক চন্দন অবশ্য জানাচ্ছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে একটি সমস্যা হয়েছিল। আজ (মঙ্গলবার) যাঁরা ভর্তি হতে পারেননি, তাঁদের জন্য অনলাইনের ব্যবস্থা করা হবে।’’
যদিও ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশ প্রশাসনিক ভবনে টিএমসিপি-র লাগানো তালা ভেঙে দেন। তাঁরা কী করবেন বুঝতে পারছেন না। দূর থেকে আসা এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘আজ ভর্তি করানো যাবে? না কি আগামিকাল ভর্তি প্রক্রিয়া হবে? তা হলে হোটেলে থাকতে হবে আরও এক দিন। সেটা ব্যয়সাপেক্ষও।’’ অভিভাবকদের দাবি মঙ্গলবারই ভর্তি করাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy