চলছে কাজ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বসার চেয়ার ভাঙা। বেরিয়ে রয়েছে ছেঁড়া গদি। পর্যাপ্ত মাইক্রোফোন নেই। যে ক’টি মাইক্রোফোন বা আলো রয়েছে, তার বেশিরভাগই বেহাল। এমনই দশা কাটোয়া শহরের সংস্কৃতি চর্চার একমাত্র কেন্দ্র সংহতি মঞ্চের। শহরের সংস্কৃতি প্রেমীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ওই কেন্দ্র সংস্কারে হাত দিয়েছে কাটোয়া পুরসভা।
পুরসভা মোড়ের ওই মঞ্চে বছরভর নানা অনুষ্ঠান হয়। নাট্যোৎসব, চলচ্চিত্র উৎসব থেকে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের অনুষ্ঠান, কাটোয়ায় সবের জন্যই ভরসা এই সংহতি মঞ্চ। অভিযোগ, বছর পাঁচেক ধরে ৭৮০টি চেয়ারের বেশিরভাগই ভেঙে পড়েছে। বাতানুকূল যন্ত্র না থাকায় গরমের সময়ে অনুষ্ঠানে নাজেহাল হন আয়োজক ও দর্শক, সকলেই। ইদানীং মঞ্চের ড্রপ সিনও পড়ে না। মঞ্চের ৩৩টি আলোর মধ্যে অধিকাংশই জ্বলে না। সাউন্ড বক্সগুলি দীর্ঘদিন বিকল। পর্যাপ্ত মাইক্রোফোন না থাকায় পিছনের দর্শকেরা শব্দ শুনতে অসুবিধায় পড়েন।
নানা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্য অপূর্ব চক্রবর্তী, সুমনা দেয়াসিনদের অভিযোগ, ‘‘আলাদা গ্রিনরুমের অভাবে বাইরে থেকে আসা নাটকের দলের সাজসজ্জায় অসুবিধা হয়। যে সব দলের সদস্য বেশি, একটি মাত্র গ্রিনরুমে তাঁদের সাজগোজ সম্পূর্ণ হয়না। তখন বাইরে আলাদা ব্যবস্থা করতে হয়। গ্রিনরুম বাড়ালে সুবিধা হয়।’’ অনুষ্ঠান আয়োজনে বেশ কয়েক হাজার টাকা খরচ করেও প্রয়োজনীর সুযোগ-সুবিধা না মেলার অভিযোগ জানিয়ে আসছিল আয়োজকেরা।
সম্প্রতি ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে সংহতি মঞ্চ সংস্কারের কাজ শুরু করে পুরসভা। জানা যায়, ১৬০টি ভাঙা চেয়ার মেরামতির জন্য ৩ লক্ষ টাকা ও আলো-শব্দের যন্ত্রপাতি মেরামতিতে ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা ধার্য হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, আলোর তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে ৩টি ‘পাওয়ার প্যাকড ডিমার’ লাগানো হবে। বিভিন্ন রঙের একই আলোর জন্য ‘ডিএমএক্স এলইডি পার’ লাগানো হবে ৬টি। এ ছাড়াও ৩টি হ্যালোজেন, দু’টি ওয়াশ লাইট বসবে। পরিষ্কার শব্দের জন্য অ্যাম্পিফ্লায়ার, মিক্সচার মেশিন, কর্ডলেস মাইক্রোফোনগুলি মেরামত করতে পাঠানো হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে আরও জানা যায়, মঞ্চ লাগোয়া নীচের ঘর দু’টিকে মহিলা ও পুরুষদের পৃথক গ্রিনরুম হিসেবে ব্যবহার করা হবে। উপরের ঘরটি স্টোররুম করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। ২৪ ফুট চওড়া ও ১৬ ফুট লম্বা পর্দাটি সংস্কারও শুরু হয়েছে। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কাজগুলি শেষ হলে বাতানুকূল যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। শৌচালয়ের সংখ্যাও বাড়ানো যায় কি না দেখছি।’’ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কাজ শেষ হবে বলে আশা তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy