শিক্ষকের অভাবে বিপাকে জেলার উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলি। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে গেলেও পঠন-পাঠন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে নতুন শিক্ষক আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। আপাতত চুক্তির ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ করে কাজ চালানোর কথা ভাবছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
কোথাও স্কুল নেই। কোথাও স্কুল বহু দূরে। কোনও স্কুলে বাড়তি পড়ুয়ার চাপ। কোথাও ছাত্রীদের জন্য আলাদা স্কুল তৈরির দাবি। এই সব কারণে ২০০৯ সালে জেলায়-জেলায় নতুন উচ্চ প্রাথমিক স্কুল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল শিক্ষা দফতর। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পঠনপাঠনের ব্যবস্থা হয় সেই সব স্কুলে। সব শ্রেণিতেই ছ’টি করে ক্লাস। সেই শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু বহু স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যেমন, গলসি ১ ব্লকের ভরতপুর জুনিয়র স্কুলে চারটি শ্রেণির জন্য চার জন শিক্ষক। এক জন অসুস্থ হলে বা কোনও প্রয়োজনে ছুটি নিলে সব শ্রেণির ক্লাস চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। স্কুলে আবার করণিকও নেই। তাই ভর্তি থেকে ফি জমা নেওয়া, স্কুলের খরচপত্র দেখাশোনা, রক্ষণাবেক্ষণ, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের কাজকর্ম, নিজেদের পিএফ সংক্রান্ত ফাইল— সবই সামলাতে হয় চার শিক্ষককে। প্রায় একই পরিস্থিতি জেলার বেশির ভাগ উচ্চ প্রাথমিক স্কুলেই।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। কিন্তু পঠনপাঠন যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য আপাতত চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করার পরিকল্পনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে। তবে তাঁদের বয়স হতে হবে ৬০-৬৪ বছরের মধ্যে। সংশ্লিষ্ট স্কুল বা আশপাশের স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। প্রাথমিক ভাবে ৬ মাসের জন্য তাঁরা চুক্তিবদ্ধ হবেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেলে তাঁদের সরে যেতে হবে। যদি ছ’মাসের পরেও পরিস্থিতি না পাল্টায় তাহলে ফের চুক্তি নবীকরণ করা হবে।
যদিও স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে এমন কোনও নির্দেশিকা এখনও আসেনি বলে জানান বর্ধমান জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক ভাস্কর পাল। তবে স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “শীঘ্র এ ব্যাপারে নির্দেশিকা পাঠানো হবে জেলায়-জেলায়। আগামি শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষকেরা ক্লাস নেবেন।” তিনি আরও জানান, জেলা স্কুল পরিদর্শকের অনুমতিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুলগুলি তিন সদস্যের কমিটি গড়বে। চূড়ান্ত নিয়োগ হয়ে গেলে তা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানিয়ে দেবে সংশ্লিষ্ট স্কুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy