Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Flood Situation

দক্ষিণবঙ্গের বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে ডিভিসি, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কর্মীদের এক দিনের বেতন

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে ডিভিসি এ বার সংস্থার কর্মীদের এক দিনের বেতন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আয়করের আওতায় থাকা সংস্থার কর্মীদের সেপ্টেম্বরের বেতন থেকে এই অর্থ কাটা হবে।

দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি।

দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০১
Share: Save:

দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিতে এ বার দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ডিভিসি কর্তৃপক্ষের। সংস্থার প্রত্যেক কর্মীকে এক দিনের বেতন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। ডিভিসির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ কুমার এই মর্মে একটি বার্তা প্রকাশ করেছেন। ডিভিসির যে কর্মীরা আয়করের আওতায় রয়েছেন, তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে এক দিনের বেতন কাটা যাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দানের সিদ্ধান্তটি কর্মীদের ঐচ্ছিক পদক্ষেপ। কোনও কর্মী অনিচ্ছুক থাকলে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা কর্তৃপক্ষকে ইমেল মারফত জানাতে বলা হয়েছে।

ডিভিসি কর্তৃপক্ষ কর্মীদের উদ্দেশে ওই বার্তায় উল্লেখ করেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের একাধিক অঞ্চল বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর মানুষ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ন্যূনতম প্রয়োজনের জিনিসটুকু তাঁদের কাছে নেই। এই কঠিন সময়ে, তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের সমবেত দায়িত্ব।” উল্লেখ্য, নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রচুর জল ছাড়তে হয়েছে ডিভিসিকে। যার জেরে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার মানুষ।

দক্ষিণবঙ্গের এই প্লাবন পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্লাবনকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ সরকার পক্ষের। এই অভিযোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দু’দফায় চিঠিও পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহেই ডিভিসি দাবি করেছে, সকলেই জল ছাড়ার কথা আগাম জানতেন। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দেয় রাজ্য সরকার। তবে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের একটি ‘মেমো’ অনুযায়ী, রাজ্য আগে থেকে জল ছাড়ার কথা জানত। ১৭ তারিখের একটি মেমো বলছে, ওই দিন হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার জেলাশাসকদের মেমো পাঠায় রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হয়েছিল। তার ফলে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে জমা জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ডিভিসি জল ছাড়ার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল।

বিজেপি নেত্রী তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ডিভিসির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যাঁরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় তাঁদের দিন কাটছে। যাঁরা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে এক দিনের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি তাঁদের ধন্যবাদ ও কুর্নিশ জানাচ্ছি।” একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যে বন্যার জন্য ডিভিসিকেই দায়ী করেছেন, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অগ্নিমিত্রা।

তৃণমূলের নেতা তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ও ডিভিসি কর্মীদের উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, “রাজ্যের নাগরিকদের বিপদে রাজ্যের নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। সেই নাগরিক কোথায় কাজ করেন, কোথায় থাকেন, এই সব না দেখে সহনাগরিকদের পাশে থাকাই উচিত। সেই মতো বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

DVC Flood Situation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy