মড়া পোড়ানোর কাঠ নেই, যার জেরে একের পর এক বেওয়ারিশ লাশ জমেছে শ্মশানে। কিছু লাশ পচেগলেও গিয়েছে। চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্ত পড়ছে গাড়ি থেকে! দুর্গাপুরের বীরভানপুর মহাশ্মশানে এমন পরিস্থিতিতে দুর্গন্ধে নাজেহাল শ্মশানযাত্রীরা। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েছেন বলে দাবি। যদিও কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, শনিবার রাতের মধ্যেই দেহগুলি দাহ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, তিন দিন ধরে শ্মশানের সামনে বেওয়ারিশ লাশের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু দেহ পোড়ানো হয়নি জ্বালানি কাঠ নেই বলে। সব মিলিয়ে সাত-সাতটি বেওয়ারিশ লাশ জমে রয়েছে শ্মশানে, যার জেরে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। নাজেহাল শ্মশানযাত্রীরা। কারও মুখে কাপড়, কেউ মুখে গামছা বেঁধে কোনও রকমে রয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, যে ভাবে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে, তাতে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জু পাল দে বলেন, ‘‘শ্মশানের পাশেই কালীমন্দির। পুজো দিতে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম ভোগ খাব। কিন্তু যা দুর্গন্ধ, তাতে নাকেমুখে কাপড় বেঁধে লাভ হচ্ছে না। তাই চলে যাচ্ছি।’’
শ্মশানের পাশেই পুরসভা। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ সেখানকার কর্মীরাও। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী দল বিজেপি। দলের সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু শ্মশানে নয়, দুর্গাপুর পুরসভাও দুর্গন্ধে ভরে উঠেছে। কাঠের অভাবে বেওয়ারিশ লাশ পড়ে রয়েছে। তিন দিন ধরেও জ্বালানি কাঠের জোগান দিতে পারল না কেউ! যাঁরা শ্মশানে আসছেন, তাঁরাও চরম সমস্যায় ভুগছেন। মৃতদের আত্মীয়-পরিজনদের অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।”
যদিও দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রাখি তিওয়ারি বলেন, ‘‘২৬ মার্চ দেহগুলি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে আনা হয়। ২৭ মার্চ কাঠ শেষ হয়ে যায়। সেই জন্য এই দেহগুলি দাহ হয়নি। ২৮ মার্চ চৈতি অমাবস্যার জন্য দাহকাজ বন্ধ ছিল। আজ শনিবার রাতে দেহগুলি দাহ করা হবে।”