বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরো দোকানে হানা দিয়ে জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। শহর ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় সেই অভিযান জারি রেখেছে কেন্দ্র ও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। এর মধ্যেই দেশ জুড়ে গুণমানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হল ১০৪টি ওষুধ। শনিবার নিজেদের পোর্টালে সেই সমস্ত ওষুধ এবং প্রস্তুতকারী সংস্থার নামের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ (সিডিএসসিও)।
সূত্রের খবর, প্রতি মাসেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পাইকারি ও খুচরো দোকান থেকে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইঞ্জেকশন, স্যালাইনের নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। এরপরে সেগুলি তাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। তেমনই গত মাসে যতগুলি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল তার মধ্যে পাশ করতে পারেনি বিভিন্ন নামী প্রস্তুতকারী সংস্থার ওই ১০৪টি ওষুধ। সিডিএসসিও-র আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বাজার থেকে যে সমস্ত ওষুধ তোলা হয় তার গুণগতমান আদৌ কতটা ঠিক আছে সেটিই পরীক্ষাতে দেখা হয়। তাতেই ভেজাল ওষুধও ধরা পড়ে।
কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী পেটের আলসার, স্নায়ু রোগের ট্যাবলেট, কাশির সিরাপ, ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট, ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, যৌনতাবর্ধক ক্যাপসুল, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়া ঠেকাতে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন, ফুসফুসের সমস্যার ইঞ্জেকশন, অ্যানাস্থিশিয়া, কেমোথেরাপি, ব্যাকটিরিয়াজনিত সংক্রমণ-সহ অন্যান্য রোগের ইঞ্জেকশনও রয়েছে ওই অনুত্তীর্ণের তালিকাতে। বাদ নেই ফিনাইল, চোখের ড্রপও।
সূত্রের খবর, ওই ১০৪টি ওষুধের মধ্যে কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে ফেল করেছে ২৭টি এবং এ রাজ্যের ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে ফেল করেছে একটি ওষুধ। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি রিঙ্গার্স ল্যাকটেটে ছত্রাকও মিলেছে। রাজ্যের ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে শ্রীরামপুরের একটি সংস্থার তৈরি ওষুধ পরীক্ষায় ফেল করেছে। বাকি অন্য সব ওষুধ অন্যান্য রাজ্যের পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি, রক্তচাপের একটি ওষুধ পুরোপুরি জাল বলেই সন্দেহ করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। সেটির তদন্ত চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
যত দিন যাচ্ছে, নিম্নমানের ওষুধ, পুরোপুরি জাল ওষুধের বিষয়টি তত প্রকাশ্যে আসছে। ওই সব ওষুধ বাজারে আসার পরেই নির্ভাবনায় ব্যবহার করছেন সাধারণ মানুষ। পরে জানা যাচ্ছে, সেই সব ওষুধ নিম্নমানের বা জাল ছিল। তাই এখন ওষুধ নিয়েও মারাত্মক সংশয়ে থাকছেন রোগীরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)