মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন, আইনি অনুমতি পাওয়া গেলেই নতুন জেলা ঘোষণা করা হবে। আসানসোল-সহ রাজ্যের তিনটি জেলা গঠনের অনুমোদন দিয়েছে আদালত, সোমবার নবান্নে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত আগামী বাংলা নববর্ষেই আসানসোল-দুর্গাপুর আলাদা জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। আর তা জানার পরেই খুশির হাওয়া আসানসোলে। দুর্গাপুরে ফের জেলা সদর করার দাবিতে সরব হয়েছেন নাগরিকেরা।
নতুন জেলা হলে ব্যবসা বাড়বে, মনে করছেন আসানসোলে বণিকসভার উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আসানসোল থেকে অনেক রাজস্ব জমা পড়ে। এ বার শহরের আরও বেশি উন্নয়ন হবে।’’ একই মত দক্ষিণবঙ্গ বণিকসভার সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের। তাঁর কথায়, ‘‘অবশেষে জেলা পেতে চলেছি শুনে ভাল লাগছে। এ বার শহরের আর্থিক ও পরিকাঠামোগত আরও উন্নয়ন হবে।’’
নতুন জেলার জন্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। অফিস-কাছারি তৈরি, জেলা আদালত নির্মাণের কাজ চলছে। আসানসোলের সরকারি আইনজীবী তাপস উকিল বলেন, ‘‘এ বার শহরেই জেলা আদালত হবে। শিল্পাঞ্চলের বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।’’ স্কুল শিক্ষিকা সুমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক টানাপড়েনের পরে পৃথক জেলা পাচ্ছি, আমরা গর্বিত।’’
দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের আবার দাবি, গত কয়েক বছরে শহরে কল-কারখানার পাশাপাশি বহু নতুন স্কুল-কলেজ, আইটি পার্ক, শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, হোটেল, নানা সংস্থার শো-রুম গড়ে উঠেছে। শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অন্ডাল বিমানবন্দর। কলকাতা থেকে দূরত্বও কম এই শহরের। নতুন জেলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি ওই সব দিক মাথায় রেখে দুর্গাপুরকে সদর করার দাবিও তুলেছেন শহরবাসী। এর আগে এই দাবিতে ১৩টি বাম গণ সংগঠনের জোট মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানোর জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। যদিও সেই কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি বলে অভিযোগ।
এ দিন কলেজ পড়ুয়া অভিষেক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন জেলার সদর দুর্গাপুরে হলেই ভাল হয়। তা না হলে দূরত্বের কারণে আমাদের কাছে বর্ধমানের সঙ্গে আসানসোলের কোনও ফারাক থাকবে না।’’ দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক হরপ্রসাদ ঘোষালও বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ফাঁকা শহর দুর্গাপুর। ধসের সম্ভাবনা নেই। জেলা সদর হওয়ার উপযুক্ত।’’ চিকিৎসক মিহির নন্দীর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘জেলা সদর কোথায় হবে তা প্রশাসন ঠিক করবে। আমাদের কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy