বসন্ত মানেই পলাশ। সেই আগুনরঙা লাল পলাশ হঠাৎ করেই হয়ে যাচ্ছে কালো। শুধু তাই নয়, কমছেও দ্রুত হারে। পূর্ব বর্ধমানের পলাশের উপর তাণ্ডব চালাচ্ছে কালো ধোঁয়া। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবেশপ্রেমীরা।
খোদ সরকারি ভবনের সামনেই পলাশ ফুলে পড়ছে ঘন কালো ধোঁয়ার আস্তরণ। বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের পাশে ভাতারে পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি পলাশ গাছ। বসন্তে ডালপালা ঢেকে রয়েছে লাল ফুলে। যাতায়াতের পথে অনেকেই এই মনোমুগ্ধকর নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য দাঁড়িয়ে পড়েন। বসন্তের পলাশ। কিন্তু এ সবের মধ্যে তাল কেটেছে ঠিকাদার সংস্থার বিটুমিন বয়লারে। ফুলে ঢাকা লাল পলাশ গাছের তলাতেই কয়েকলদিন ধরে নাগাড়ে পুড়ছে বিটুমিন বয়লার। তারই কালো ধোঁয়া গ্রাস করছে লাল ফুলে সেজে থাকা গাছগুলিকে।
আরও পড়ুন:
ভাতার বিডিও অফিসের সামনেই একটি ঠিকাদার সংস্থা রাস্তা সংস্কারের কাজের জন্য বিটুমিন বয়লার ও মিক্সিং মেশিন রেখে কাজ করছে। লোকালয়ের মধ্যে ক্রমাগত পিচ পোড়ানোর জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। তার উপর পলাশ গাছের তলাতেই উচ্চ তাপমাত্রার এই বিটুমিন বয়লার চালানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবেশপ্রেমীরা অনেকেই বিরক্ত। গাছগুলি শেষ পর্যন্ত জীবিত থাকবে কি না তা নিয়েও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের একাংশের ক্ষোভ, মহকুমা প্রশাসনের নাকের ডগায় এই ঘটনা ঘটলেও গাছগুলি রক্ষা করতে সদিচ্ছা দেখাচ্ছেন না কেউ। যদিও ভাতারের বিডিও দেবজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতাম না। এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ পরিবেশপ্রেমী আবু আজাদ বলেন, ‘‘আমরা গাছ রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষদের সচেতন করি। যদি প্রশাসনিক ভবনের সামনেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে তা হলে সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।’’
স্থানীয় বাসিন্দা অশোক হাজরা, শেখ আব্দুলরা জানাচ্ছেন, প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে তৎকালীন বিডিও অরিন্দম রায় নিজে উদ্যোগী হয়ে অফিসের সামনে এই পলাশ গাছগুলি লাগিয়েছিলেন। এমনিতেই নীল পলাশ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সাদা পলাশ সারা রাজ্যে খুঁজে পাওয়া যায় হাতে গোনা সংখ্যায়। পরিবেশপ্রেমীরা বলছন, ‘‘লাল পলাশের সংখ্যাও উত্তরোত্তর কমে আসছে।’’