বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের আবেদন গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। রত্নার আবেদন ছিল, এই মামলায় তাঁর পক্ষের সাত জন সাক্ষীরই সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হোক! তবে নিম্ন আদালত মাত্র দু’জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছিল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানাল, রত্নার আবেদন মতো বাকি পাঁচ জনেরও সাক্ষ্যগ্রহণ করতে হবে নিম্ন আদালত। শুধু তা-ই নয়, অগস্ট মাসের মধ্যেই এই বিবাহবিচ্ছেদ মামলার নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
গত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লা এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চ রত্নার বক্তব্য তলব করেছিল। ওই মামলায় নিজের বক্তব্য আদালতকে আগেই জানিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার প্রেক্ষিতেই রত্নার বক্তব্য জানতে চায় দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবারের শুনানিতে রত্না তাঁর আবেদনে জানান, তিনি যত জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা বলেছিলেন, তা নেওয়া হয়নি।
২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর আলিপুর আদালতে স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন শোভন। ওই মামলায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের পক্ষে তিন জন সাক্ষী দেন। তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রাথমিক ভাবে রত্না আদালতের কাছে আর্জি জানান, তাঁর পক্ষে ১৮-২০ জন সাক্ষ্য দেবেন। আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে রত্না নতুন তালিকা দিয়ে তাঁর পক্ষে সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন জানান। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসাবে রত্না তাঁর ছেলে, বাবা ও ভাইয়ের নাম জমা দেন। আলিপুর আদালত ওই আবেদনেও মান্যতা দেয়নি। গত ১০ জানুয়ারি বিচারক জানান, মামলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে সম্পর্কিত ব্যক্তিদেরই সাক্ষ্য নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে রত্নার নিজের এবং তাঁর ছেলের সাক্ষ্য নিতে রাজি হয় আদালত।
নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে যান রত্না। সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ হাই কোর্টের বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ রায় দিয়ে জানায়, রত্নার বাকি সাক্ষীদের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাযথ। বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পরই তৃণমূল বিধায়ক রত্না সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবারের শুনানিতে রত্না আবেদন করেন, নিম্ন আদালতে দু’জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। বাকি পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন রত্না। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে নিম্ন আদালত এবং কলকাতা হাই কোর্টে কম চেষ্টা হয়নি। কিন্তু আমি সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বিচার পেয়েছি। তাই আমি ভারতের বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাই। দেশে বিচারব্যবস্থা আছে বলেই আমার মতো মহিলা লড়াই করার মতো শক্তি পান।’’