Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
সিঙ্গুরে সভা

বাস চলল ঘুরপথে, যাত্রীও কম

আদিবাসী নাচ থেকে রাস্তার ধারে রান্না— সিঙ্গুর থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরেও উৎসবের মেজাজে দেখা গেল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

আদিবাসী নাচ থেকে রাস্তার ধারে রান্না— সিঙ্গুর থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরেও উৎসবের মেজাজে দেখা গেল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের।

বুধবার হুগলি সীমানা ঘেঁষা জামালপুরের জৌগ্রামে শিবির করেছিল তৃণমূল। সেখানে বসেই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন মন্ত্রী-নেতারা। কিছুক্ষণের মধ্যেই হন্তদন্ত হয়ে ঢুকতে দেখা যায় বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝিকে। হাঁফাতে হাঁফাতে বলেন, ‘‘চন্দনপুর থেকে আর গাড়ি নিয়ে এগোনো যাচ্ছে না। মঞ্চের কাছে পৌঁছাতে হলে অন্তত ১০ কিলোমিটার হাঁটতে হতো। তাই শিবিরে চলে এলাম।’’

শিবিরে বসে দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথও বলেন, ‘‘এক ঘন্টার মধ্যেই সভায় ঢুকতে না পেরে দু’শোর উপর গাড়ি বাড়ির পথ ধরেছে। এর সঙ্গে ছোট যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি রয়েছে। বুঝুন কী রকম ভিড় হয়েছে!”

এ দিন সিঙ্গুরের সভার জন্য কলকাতাগামী বেশ কিছু ভলভো বাস বাতিলও করা হয়। সংস্থার তরফে নোটিস দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে যেমন দুপুর দেড়টার পরে দুটি বাস বাতিল করা হয়। সিঙ্গুর এড়াতে বাসগুলি আরামবাগ হয়ে ঘুরে যাওয়ায় দু’ঘন্টারও বেশি দেরি হয়। দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহণের কলকাতাগামী বাসগুলিতে এ দিন একেবারেই যাত্রী ছিলেন না। কোনও বাস বাতিল করা হয়নি।

সকাল ৯টা থেকেই সিঙ্গুরমুখী গাড়ির ভিড় জমতে শুরু করে হুগলির হরিপাল থানার হিমাদ্রী কেমিক্যাল মোড়ে। ওখান থেকে সিঙ্গুরের দূরত্ব চার কিলোমিটার। পুলিশ অবশ্য বর্ধমান থেকে ওই মোড় পর্যন্ত কড়া নজর রেখেছিল। মেমারির পালশিট পুলিশ ক্যাম্পের কাছ থেকে যাত্রবাহী গাড়িগুলি জিটি রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। গুড়াপ থানার মহেশ্বরপুর মোড় থেকে কলকাতামুখী যাত্রীবাহী গাড়িগুলিকেও জিটি রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। একমাত্র ছাড় ছিল তৃণমূলের পতাকা লাগানো সিঙ্গুরগামী বাস, ম্যাটাডর কিংবা ছোট গাড়ির। ফলে হিমাদ্রী কেমিক্যাল মোড় থেকেই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধারে গাড়ি রেখে হেঁটে মঞ্চের কাছে যান তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। একটা সময় মূল মঞ্চ থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে চন্দনপুরের কাছে গাড়ি রেখে হাঁটতে হয়।

বর্ধমান থেকে সিঙ্গুরের আগে পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তায় দু’একটা জায়গা ছাড়া যাত্রীবাহী গাড়িও চোখে পড়েনি এ দিন। সকাল থেকেই দেখা যায়, মহেশ্বরপুর থেকে হিমাদ্রি কেমিক্যালের মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে একাধিক জায়গায় রান্নার ব্যবস্থা করেছেন তৃণমূল কর্মীরা। কেউ এসেছেন রায়না থেকে, কেউ বাঁকুড়া। গ্যাস জ্বালিয়ে রীতিমতো মাংস-ভাতের আয়োজন ছিল সেখানে। বর্ধমানের মালিগ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সিরাজ আবার বলেন, “দিদির অনশনের সময় আমরাও কার্যত ভুখা পেটে ছিলাম। আনন্দের দিনে আমরা একটু পিকনিকের মেজাজে কাটাব না!”

তবে উৎসবের মাঝে সমস্যায় পড়েন তেল, গ্যাস ট্যাঙ্কারের চালক ও পাথর ও লোহা বোঝাই গাড়ির চালকেরা। আটকে পড়ে হিমাচল প্রদেশ থেকে আসা আপেলের গাড়িও।

(সহ-প্রতিবেদন: সুব্রত সীট)

অন্য বিষয়গুলি:

Singur Bus route
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE