পাঁচ বছরেও বিচার শেষ হয়নি। সেই কথা জানিয়ে এক অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। একই কারণে সিভিক ভলান্টিয়ার খুনে জেলবন্দি অপর এক অভিযুক্ত রাজু মুন্ডারও জামিন মঞ্জুর করল বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। সোমবার রাজুর আইনজীবী জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। তিনি জানান, এই মামলায় অপর এক অভিযুক্ত মানবেন্দ্র চাকির জামিন মঞ্জুর করেছে হাই কোর্ট। তাই তাঁর মক্কেলকেও জামিন দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবী অবশ্য জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে রাজুকে জামিন দিয়েছেন বিচারক।
২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দেওয়ানদিঘি থানার বড়কাশিয়াড়ার বাড়ি থেকে বার হন সিভিক ভলান্টিয়ার রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পর দিন অর্থাৎ ৪ ফ্রেব্রুয়ারি এলাকার একটি সাঁকোর তলা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রবীন্দ্রনাথের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁর মোটরবাইক এবং মোবাইল পাওয়া যায়নি। খুনের অভিযোগ করে সিভিক ভলান্টিয়ারের বোন কবিতা ঘোষ (ভট্টাচার্য) বর্ধমান থানায় জানান। তদন্তে নেমে ১০ দিন পর, ১৫ ফেব্রুয়ারি মানবেন্দ্র, রাজু এবং বিপ্লব ঘোষ নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে জমি নিয়ে বিবাদের কথা। পুলিশ জানতে পারে জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদের জেরে ভাইপো রবীন্দ্রনাথকে খুনের পরিকল্পনা করেন কাকা বিপ্লব। গোয়ালঘর তৈরি নিয়ে কাকা-ভাইপোর মধ্যে বিবাদ চরমে উঠেছিল। সেখান থেকেই ওই খুনের ঘটনা। পুলিশ দাবি করে, বিপ্লবের নির্দেশে রাজু এবং মানবেন্দ্র মিলে রবীন্দ্রনাথকে খুন করেন। তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তার পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারকে। খুনের পর বিপ্লবের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা দাবি করেন দুই ভাড়াটে খুনি। সেই টাকা দিয়েও দেন বিপ্লব। নিজের ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলেছিলেন বিপ্লব।
পাঁচ বছর ধরে চলছে ওই মামলা। ধৃতেরা পাঁচ বছর ধরে জেলে রয়েছেন। দ্রুত বিচার পাওয়া মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণের পর জামিন পেয়ে যান মানবেন্দ্র। একই কারণে রাজুরও জামিন মঞ্জুর হল। আদালতের নির্দেশ, পূর্ব বর্ধমান জেলার ভৌগোলিক সীমানা ছাড়তে পারবেন না অভিযুক্ত। মামলার শুনানির দিন আদালতে উপস্থিত হতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, বর্ধমান থানার আইসি-র কাছে সপ্তাহে এক দিন করে হাজিরা দেওয়া এবং বাসস্থানের ঠিকানা দেওয়ার শর্তে রাজুর জামিন মঞ্জুর করেন প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাস চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy