বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছেন অধ্যক্ষ। নিজস্ব চিত্র।
দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের ফর্ম পূরণের সময় পাঁচশো টাকা করে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের কাছে এমনই অভিযোগ করল এসএফআই। কলেজের অধ্যক্ষ অচিন্ত্য পাল অবশ্য বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদ নয়, হাজিরা অত্যন্ত কম থাকায় ওই পড়ুয়াদের সতর্ক করার জন্যই কলেজের পক্ষ থেকে ওই টাকা নেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয়, পরে তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।’’
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট হাজিরা না থাকায় দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকশো পড়ুয়াকে বার্ষিক পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছিল। কলেজ থেকে ওই পড়ুয়াদের বলা হয়, ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ নিয়ে নিতে। পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করায় শেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফর্ম পূরণ করানোয় সম্মত হন। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন অনেক পড়ুয়াও রয়েছেন যাঁদের ন্যূনতম ২০ শতাংশ হাজিরা নেই।
গত কয়েক দিন ধরে ফর্ম পূরণের প্রক্রিয়া চলছে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট ফি ছাড়া আরও পাঁচশো টাকা নেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে। এই অর্থ ফেরতের দাবিতে মঙ্গলবার কলেজের সামনে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। এ দিনই এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়। সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য সৌমেন কিস্কু বলেন, ‘‘টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সঙ্গে যোগসাজস করে কলেজ কর্তৃপক্ষ এমন অনৈতিক কাজ করেছেন। তাছাড়া ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পড়ুয়াদের কাছ থেকে হাজার-হাজার টাকা তোলা হচ্ছে।’’
কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য শীল অবশ্য দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে ছাত্র সংসদের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যে অভিযোগ আনছে এসএফআই। পড়ুয়াদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে ওরা। তাই এই সুযোগে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে।’’
অধ্যক্ষ অচিন্ত্যবাবু জানান, কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় বারোশো পড়ুয়ার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের পর্যাপ্ত হাজিরা নেই। বিজ্ঞান বিভাগে হাল ভাল। কলা ও বাণিজ্য বিভাগের পরিস্থিতি খুব খারাপ। তিনি বলেন, ‘‘ঘনিষ্ঠ মহলে কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ওই পড়ুয়াদের সতর্ক করার জন্য এখন পাঁচশো টাকা করে নেওয়া হবে। অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার সময়ে তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।’’ তবে এ ভাবে কোনও হিসেব ছাড়া বাড়তি অর্থ নেওয়ার সংস্থান যে কলেজের নেই, তা স্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ উদ্দেশ্যে এগোতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা ঠিক হয়নি। আমি উচ্চ শিক্ষা দফতরকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।’’ দ্রুত ওই অর্থ পড়ুয়াদের ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান অধ্যক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy