Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
জখম ৩০ যাত্রী

ভাঙা রাস্তায় রেষারেষি, উল্টোল বাস

বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় লোকজন কম। তার মধ্যেও যাত্রী তোলার জন্য রেষারেষি চলছিল দুই বাসের। কয়েক কিলোমিটার ধরে আগুপিছু যাওয়ার পরে একটি বাসকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্যটি গিয়ে পড়ে নয়ানজুলিতে। জখম হন প্রায় ৩০ জন যাত্রী।

জলে: রায়নার মিরেপোতা গ্রামে নয়ানজুলিতে পড়ে যাত্রীবাহী বাস। নিজস্ব চিত্র

জলে: রায়নার মিরেপোতা গ্রামে নয়ানজুলিতে পড়ে যাত্রীবাহী বাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় লোকজন কম। তার মধ্যেও যাত্রী তোলার জন্য রেষারেষি চলছিল দুই বাসের। কয়েক কিলোমিটার ধরে আগুপিছু যাওয়ার পরে একটি বাসকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্যটি গিয়ে পড়ে নয়ানজুলিতে। জখম হন প্রায় ৩০ জন যাত্রী।

রবিবার সকালে বর্ধমান আরামবাগ রুটে রায়নার মিরেপোতা গ্রামের কাছে দুর্ঘ়টনাটি ঘটে। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও রায়না ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে ১২ জন ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে দক্ষিণ দামোদর এলাকায় গত কয়েক দিন পরপর কয়েকটি বাস দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটল। গত সপ্তাহে খণ্ডঘোষের দৈচাঁদা গ্রামের কাছে বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দু’জন প্রাণ হারান। দু’জনেই খণ্ডঘোষ থানার বাসিন্দা। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে রায়নার দলুইদিঘি কিসান মান্ডির কাছে একটি বাস নয়ানজুলিতে উল্টে গিয়ে ১০ জন জখম হন। গত সেপ্টেম্বরে ভোরবেলায় ওই রোডের গৌরাঙ্গ মোড়ে একটি দুর্ঘটনায় চার জন প্রাণ হারান। বারবার দুর্ঘটনায় যান নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের যদিও দাবি, বাঁকুড়া মোড়-সহ বিভিন্ন মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এ দিনের দুর্ঘটনার জন্য পুলিশ রেষারেষিকে দায়ী করতে রাজি নয়। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “যন্ত্রাংশ ভেঙে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।’’ আর এই যন্ত্রাংশ ভাঙার জন্য রাস্তাকে দায়ী করেছে দক্ষিণ দামোদর বাস মালিক সমিতি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে বর্ধমান থেকে মেচেদা যাচ্ছিল বাসটি। সামনে ছিল আরামবাগ রুটের একটি বাস। যাত্রী তোলার জন্য সগড়াই মোড় থেকে দুটি বাসের রেষারেষি চলতে থাকে। স্থানীয়দের দাবি, মিরেপোতার কাছে মেচেদা রুটের বাসটি ওভারটেক করার পরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে। তারপরেই নয়ানজুলিতে মুখ থুবড়ে পড়ে। বাসের সামনের কাঁচ ভেঙে যায়। আহতদের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে রায়নার পুলিশ গিয়ে আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বাসটিকে আটকও করা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুন্সি আজিজ হোসেনের দাবি, “বাস দুটিই খুব জোরে চলছিল। রাস্তাও ভাঙা। মনেই হচ্ছিল কিছু একটা হবে।’’ ওই বাসের যাত্রী নিমাই পালের দাবি, “যাত্রী তোলার জন্য সগড়াই মোড় থেকে রেষারেষি শুরু হয়। তাতেই দুর্ঘটনা।’’

দুর্ঘটনার জন্য রাস্তা খারাপকে দায়ী করেছেন বাস মালিক সমিতির সম্পাদক শেখ রিয়াজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “ওই রাস্তা বাস চালানোর অনুপযুক্ত। সে কারণেই ওভারটেক করতে গিয়ে বাসের চাকা বড় গর্তে পড়ে যায়। বাসটির যন্ত্রাংশ ভেঙে গেলে আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি চালক।’’ জেলা প্রশাসনের আশ্বাস, ১৫ অগস্টের মধ্যে সব রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Accident Overtake Injured
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE