রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা নিয়ে ভিড় কর্মী-সমর্থকদের। —নিজস্ব চিত্র।
চড়া রোদে ত্রাহিত্রাহি অবস্থা। সেই রোদ-গরমে সভা। বর্ধমান জেলায় বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তিনটি জনসভাতেই তাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ঘুরেফিরে এল গরম নিয়ে উদ্বেগের কথা। গরমের জন্য সংক্ষেপও করলেন সভা।
গরম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ ফিরে এল তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে। রাজ্য ক্রমে রোজগার বাড়ালেও কেন্দ্র টাকা কেটে নেওয়ার পরিমাণ বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “ওরা আমাদের ভাতে মারার চক্রান্ত করছে। ওদের এ বার দাওয়াই দিতে হবে। গণতন্ত্রের দাওয়াই!”
এ দিন বর্ধমান শহরে উৎসব ময়দানে দলীয় প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতার সমর্থনে আয়োজিত সভায় মমতা প্রশ্ন তোলেন গুজরাত মডেল নিয়েও। তিনি বলেন, “এ বারও রাজ্য ১০০ দিনের প্রকল্পে দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছে। গত কালই এই চিঠি মিলেছে। অথচ, আমাদের এই কৃতিত্বের কথা আমাদের রাজ্যেই কেউ প্রচার করে না। অনেকে গুজরাত-গুজরাত করছে। তারা জানে না, এই প্রকল্পে গুজরাট মাত্র পাঁচশো কোটি টাকা খরচ করেছে। আর আমরা করেছি পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ওই রাজ্যের চেয়ে আমাদের মাথা পিছু আয় বেশি, শিশুমৃত্যুর হার কম। তবু লোকে গুজরাত নিয়ে লাফালাফি করে!”
সভায় বাম আমলের রেখে যাওয়ার ঋণ নিয়েও অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, “এ বারের ভোটে বাংলার ইজ্জতের নির্বাচন। দিল্লিতে গিয়ে বলতে হবে, সিপিএম অত টাকা ধার করে গিয়েছে তো সিপিএমের বাড়ি বিক্রি করে ধার শোধ করাও। আমাদের টাকা কাটতে পারবে না! আমাকে আপনাদের একটু সাহায্য করতে হবে। এমন করে বোতাম টিপুন যেন জোড়াফুল সব জায়গায় জেতে। বোতাম টিপুন এখানে, দিল্লি জব্দ হবে ওখানে।”
মমতা এ দিন আরও বলেন, “বাংলাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই কলকাতা এয়ারপোর্টে বিশ্ববাংলা নামে সংস্থা খুলেছি। তাতে যেমন তাঁতিদের হাতের কাজ রয়েছে, তেমনি রয়েছে বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানা থেকে অন্য বিখ্যাত মিষ্টি। অনেকে চোখে দেখেও অনেক কিছু দেখতে পান না। তাঁদের চোখে যাতে পড়ে, তাই আমরা এই কাজ করছি।”
উৎসব ময়দানের সভায় হাজার পঞ্চাশ মানুষ ভিড় জমাতে পারেন। এ দিন তৃণমূল নেত্রীর সভায় এই মাঠ অবশ্য ভরেনি। নেত্রীর কপ্টার উড়ে এসেছিল নির্দিষ্ট সময়েই। কত লোক হয়েছিল, সে প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত তৃমমূল নেতারাই। বর্ধমান জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবানাথ বলেন, “সভায় প্রায় তিরিশ হাজার লোক হয়েছিল। তবে রোদের জন্য প্রচুর মানুষ বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন।” দলের শিল্পাঞ্চলের নেতা তথা কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটকের আবার বক্তব্য, “সভায় ১২-১৪ হাজার লোক হয়েছিল। তবে সকলে ভেবেছেন, দিদির আসতে দেরি হবে। তাই ৪টের সময়ে সভা শুরুর কথা থাকলেও, তাঁরা দেরি করে এসেছেন। দিদি বর্ক্তৃতা করে বেরিয়ে যাওয়ার সময়েও প্রচুর মিছিল আসছিল।” দলের বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকের দাবি, “রোদের জন্যই সভায় ভিড় হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy