সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। ইনসেটে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
রমাপদ চৌধুরী। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এই নামগুলো একে একে চলে গেল। এ বার আমরা কোথাও আটকালে আর কার কাছে যাব?
আজ সারা দিন ধরেই নীরেনদার মুখে শোনা নানা মজার গল্প ও ঘটনার কথা মনে পড়ছে। আপাতগম্ভীর মানুষটার মধ্যে যে কী অদ্ভুত রসবোধ ছিল, তা তাঁর সঙ্গে আমরা যাঁরা ঘনিষ্ঠ হয়ে মিশেছি, তাঁরা জানি। যখনই লেখা নিয়ে সমস্যায় পড়েছি বা কোনও গাইডেন্সের দরকার পড়েছে, চোখ বুজলে যে দু’একটা মুখ বার বার ভেসে উঠেছে, তার মধ্যে অন্যতম নীরেনদা।
বড় বেশি প্রশ্রয়, যোগ্যতার চেয়েও বেশি আদর ও স্নেহ পেয়েছি তাঁর থেকে। আসলে তখন বাংলা সাহিত্যের যুগটাই অন্যরকম ছিল। বেশ কয়েক জন সম্পাদকের সঙ্গে কবি-লেখকদের এক অনাবিল হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল. যেখান থেকে শাসন করা যায়, বকুনি দেওয়া যায়, আবার আদরে বুকে টেনে নেওয়া যায়। সম্প্রতি সাহিত্য অকাদেমিপুরস্কারের কথা ঘোষণা হওয়ার পরেও আমার জন্য তাঁকে আনন্দিত হতে শুনেছি।
আরও পড়ুন: ‘পিতৃস্নেহে আগলে রেখেছিলেন, সেই আশ্রয়টাই আমার চলে গেল’
কয়েক বার বুঝতে পারিনি, কোন লেখাকে কী ভাবে চালব, তখন একটা ফোন শুধু। ব্যস! সব সমস্যার সমাধান। আজ থেকে ফোন নম্বরটাই শুধু ডায়েরিতে রয়ে গেল, মানুষটা ‘নেই’ হয়ে গেলেন! খুব কম কথার মানুষ ছিলেন, কিন্তু ওই মুখের হাসিটা যেন ছিল সব অব্যক্ত কথার ফুলঝুরি। একটি দু’টি কথাতেই এত কিছু বুঝিয়ে দিতে পারতেন— সেটাও একটা বিরাট গুণ ছিল।
আজ তাঁর চলে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের যেমন অপরিসীম ক্ষতি, তেমনই আমার কাছে এক ব্যক্তিগত ক্ষতি। আজ এত দুঃখের মধ্যে একটা কথাই বার বার মনে হচ্ছে, অতীতটাই যদি না থাকে, তা হলে আর বর্তমানের কী দাম! আমারও অতীত হারাল আজ।
আরও পড়ুন: ‘সিগারেট-চা দিয়ে বসিয়ে আমাকে তালাবন্ধ করে চলে গিয়েছিলেন’
তবে রমাপদদাকে যেমন নীরেনদা বেশি দিন একা থাকতে দিলেন না, আমরাও আসছি নীরেনদা, আপনাকে বেশি দিন একা থাকতে দেব না…।
আরও পড়ুন: এক এক করে সিনিয়াররা চলে যাচ্ছেন…
আরও পড়ুন: ‘কাঁধে হাত রেখে ওই নিরুচ্চার হাসির দাম মেটাতে পারবে না কবিতাও’
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy