Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
West Bengal News

কাশীপুরের চিলতে ঘরে পুরোদস্তুর বাঙালি ভোজ অমিত শাহদের জন্য

কাশীপুর লকগেট রোডের নিম্নমধ্যবিত্ত এলাকা ঘোষবাগানে গিয়ে দলীয় কর্মীর বাড়িতে দুপুরের খাওয়া সারলেন অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতির জন্য ছিল আপাদমস্তক বাঙালি আহারের ব্যবস্থা।

কলকাতার কাশীপুরে দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ বিজেপি সভাপতির। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

কলকাতার কাশীপুরে দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ বিজেপি সভাপতির। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:১৮
Share: Save:

ভোট বড় বালাই। কাশীপুর লকগেট রোডের নেহাৎ নিম্নমধ্যবিত্ত, হতশ্রী এলাকা ঘোষবাগানের ঝুপড়ি ঘরে মধ্যাহ্নভোজ সেরে আরও এক বার বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির ভিভিআইপি-রা।

কেউ গুজরাতের, কেউ ওডিশার, আবার কেউ সঙ্ঘ প্রচারক হিসেবে নানা সময়ে ভারতের নানা প্রান্তে কাটিয়ে আসা। খাদ্যাভ্যাসে সবাই একে অপরের থেকে অনেক আলাদা। কিন্তু বুধবার দুপুরে ঘোষবাগানের মানস সেনের বাড়িতে আপাদমস্তক নিরামিষ বাঙালি মেনুতে দুপুরের খাওয়া সারলেন সবাই মিলে। বছর আঠাশের যুবক মানসের অতিথি তালিকায় এ দিন সবচেয়ে ওজনদার নামটা নিশ্চয়ই অমিত শাহ। তবে সঙ্গে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সুরেশ পূজারী, শিব প্রকাশও।

কী খেলেন অমিত শাহরা?

কৈলাস বিজয়বর্গীয় ভাত খান না একেবারেই। তাই তাঁর জন্য ফলাহারের ব্যবস্থা ছিল। তবে অমিত, শিব প্রকাশ, সুরেশ এবং সঙ্গে তিন বাঙালি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, দীপাঞ্জন গুহ তৃপ্তি করেই খেলেন, কোনও পদই বাদ দিলেন না।

আরও পড়ুন: অতিথি অমিত, বিরসার ঘরে বসছে টাইলস

ঘোষবাগানের এই সেন পরিবার দীর্ঘ দিন ধরেই সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ। মানসের বাবা মারা গিয়েছেন। কিন্তু জীবদ্দশায় তিনি রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বহু বছর ধরে দলের সঙ্গে রয়েছেন এবং একেবারেই সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত ঘর— মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতির জন্য এর চেয়ে ভাল যুগলবন্দি আর কী-ই বা হতে পারত? আর পারিবারিক ভাবে যে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তিনি, সেই সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা দুপুরের খাওয়া তাঁর বাড়িতে সারবেন, মানস সেনের জন্য এর চেয়ে আনন্দের বিষয়ই বা কী হতে পারত? তাই শপিং মল চেনের কর্মী মানসও নিজের সাধ্যের মধ্যে যথাসম্ভব আয়োজন করলেন। মানসের মা মণিকা দেবী নিজের হাতেই রেঁধেছিলেন অমিত শাহের জন্য। আর পরিবেশন করার জন্য হাতিবাগানের শ্বশুরবাড়ি থেকে কাশীপুর ঘোষবাগানের বাড়িতে চলে এসেছিলেন মানসের দিদি শম্পা শীল।

আরও পড়ুন: নাক গলাবে না কেন্দ্র, পাহাড় সমস্যা মেটাতে হবে রাজ্যকেই, বলল বিজেপি

নির্বিঘ্নেই মিটেছে আপ্যায়ন। অতিথিরা বেরিয়ে যাওয়ার আগে অমিত শাহকে মানস সেনের ছোট্ট অনুরোধ, ‘‘আমাকে যেন ভুলে যাবেন না।’’ স্মিত হাসি নিয়ে মানসের মাথায় হাত রেখে বেরিয়ে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি।

কাশীপুরের এই এলাকায় রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের দখলে। কাউন্সিলর, বিধায়ক সকলেই তৃণমূলের। তবু বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির আগমন উপলক্ষে বস্তির গলিপথে উৎসুক ভিড় জমেছিল। পাতা হয়েছিল সবুজ কার্পেট। মাথায় গেরুয়া-সবুজ শামিয়ানা। ছড়ানো হয়েছে ফুল। স্লোগান উঠেছে ‘জয় শ্রী রাম’।

এপ্রিল মাসে এ রাজ্যে এসে নকশালবাড়ির যে আদিবাসী গৃহে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত, তাঁরা পরের দিনই তৃণমূলে যোগ দেন। কাশীপুরে কী হবে? মনিকাদেবীর জবাব, ‘‘কোনও প্রশ্নই নেই। আমাদের এখানে ও সব সমস্যা নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE