মেদিনীপুর আদালত চত্বরে মানস ভুইয়াঁ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
সবংয়ে ছাত্র পরিষদ কর্মীর মৃত্যু এবং ওই ঘটনায় কংগ্রেস কর্মীদেরই গ্রেফতারের প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে চান অধীর চৌধুরী। কিন্তু তিনি চাইলেও বিধানসভা ভোটের আগে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে নামার কোনও ইঙ্গিতই মিলল না শনিবার তাঁর ডাকে বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে।
দলের বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি এবং অন্যান্য নেতৃত্বকে নিয়ে এ দিন বিধান ভবনে বৈঠক ডেকেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। কিন্তু প্রাক্তন তিন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র, মানস ভুইয়াঁ, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি, বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল মান্নানের মতো প্রথম সারির মুখদের অনেকেই বৈঠকে ছিলেন না। মূলত অধীর-ঘনিষ্ঠরাই ছিলেন বৈঠকে।
সবংয়ে ছাত্র পরিষদ কর্মী খুনের পরে অধীর-শিবির ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, সেখানে যে ভাবে আন্দোলন হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। এ দিন মেদিনীপুরে এসে অধীরের নাম না করে সবংয়ের বিধায়ক মানসবাবু পাল্টা কটাক্ষ করেন, “সবংয়ের মানুষ, পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ জানেন, কী ভাবে আন্দোলন করতে হয়। মেদিনীপুরের মানুষকে কেউ যেন জ্ঞান না দেন!” তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘সবংয়ের মানুষকে অন্য কোনও নেতার কাছে আন্দোলন শিখতে হবে না। মানস ভুইয়াঁ সবংয়ের মানুষের আন্দোলনেরই প্রোডাক্ট!” গত ১৮ অগস্ট কংগ্রেসের ডাকা বাংলা বন্ধের দিন সবংয়ের ব্লক অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পাঁচ জন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিন জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। ধৃত কংগ্রেস কর্মীদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে এ দিন মেদিনীপুর আদালতে এসেছিলেন মানসবাবু।
অধীর অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, সবংয়ে কী ভাবে আন্দোলন করা যায়, তা নিয়ে মানসবাবুর সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকেও এ দিন সেখানে পাঠিয়েছিলেন তিনি। অধীরের বক্তব্য, ‘‘সবংয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে কী ভাবে আন্দোলন করা যায়, তা স্থানীয় নেতৃত্বকে ঠিক করতে বলা হয়েছে।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা দরকার বলে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। অধীর জানান, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছেন। দলে গরহাজির নেতাদের একসঙ্গে ডেকে বৈঠক করার জন্য অধীরকে অনুরোধ করেন দলের আইনজীবী নেতা অরুণাভ ঘোষ। কী ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলে ওই নেতারা একত্রিত হবেন, তার লিখিত বয়ান অরুণাভবাবুকে করে দেওয়ার পাল্টা অনুরোধ করেন অধীর।
কংগ্রেস সূত্রের আরও খবর, এ দিনের বৈঠকে গরহাজির নেতাদের অনেকেই দলবদ্ধ ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে হাইকম্যান্ডের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন— এই প্রসঙ্গ অধীরই বৈঠকে তোলেন। সেখানে তাঁর দাবি, তিনি কোনও নেতাকে অসম্মান করেন না। সঙ্কীর্ণ বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনীতি না করে তিনি সকলকে নিয়েই চলতে চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy