Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

টাকা ফেরত দিতে পারায় হুমকি, হাসনাবাদে মৃত্যু সারদার এজেন্টের

শোকের ছায়া পরিবারে। ইনসেটে, তাপস দাস।—নিজস্ব চিত্র।

শোকের ছায়া পরিবারে। ইনসেটে, তাপস দাস।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০২:২২
Share: Save:

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল সারদার এক এজেন্টের। তাপস দাস (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি হাসনাবাদের বরাজপুর গ্রামে। জমা টাকা ফেরত দিতে না পারায় গ্রাহকদের কাছে তাঁকে নিয়মিত গঞ্জনা শুনতে হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পরিবারটি। তাদের দাবি, সে কারণেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাপসবাবু। অর্থলগ্নি সংস্থায় রাখা টাকা ফিরত দিতে না পারায় এই নিয়ে গত কয়েক মাসের মধ্যে বসিরহাটে এক দম্পত্তি-সহ মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরুণহাট-রামেশ্বরপুর পঞ্চায়েতর এলাকায় সারদার এজেন্ট হিসাবে বেশ নামডাক ছিল তাপসবাবুর। তিন বছর সারদায় কাজ করার সুবাদে এলাকার মানুষ তার মাধ্যমে ওই কোম্পানিতে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন।

কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে টাকা ফেরতের দাবিতে গ্রাহকেরা সোচ্চার হতে শুরু করেন। টাকা ফেরত দিতে না পারলে তাপসবাবুকে খুনের হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। দিন দিন চাপ বাড়ছিল। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ওই ব্যক্তি। গত কয়েক মাস ধরে কার্যত নিজেকে তিনি ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির লোকজন।

পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাপসবাবুর খোঁজ মিলছিল না। সন্ধ্যার দিকে তাঁকে মাঠের মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাপসবাবুকে। শুক্রবার সকালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান তাপস। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সৌরভ ও বৃষ্টি দাস দম্পতির দুই ছোট ছেলেমেয়ে। তাদের বুকে আঁকড়ে কাঁদছিলেন স্ত্রী চন্দনাদেবী। বললেন, “সারদায় রাখা টাকা ফেরতের জন্য মানুষটাকে কম অপমান-নির্যাতন সহ্য করতে হয়নি। ইদানীং টাকা ফেরত দিতে না পারলে খুনের হুমকি দিয়ে ফোন করা হচ্ছিল। হয় তো আত্মসম্মানের কথা ভেবেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন। এখন বাচ্চা দুটোকে কী ভাবে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করব, কী ভাবেই বা বৃদ্ধা শাশুড়ির দেখাশোনা করব, ভেবে পাচ্ছি না।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE