শিল্পা দেবনাথ, আনারুল মণ্ডল, রাজা দাস
স্বামীকে খুনের পরই প্রেমিককে ফোন করেছিল শিল্পা। জেরায় এই তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই বসিরহাটের কমল দেবনাথ খুনের অভিযোগে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হল শিল্পার প্রেমিক আনারুল মন্ডলকে। এর আগে পুলিশ শিল্পা ও তার বন্ধু রাজা দাসকে এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করেছিল।
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার রাতে কমলের গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে টেনে ধরেছিল রাজা দাস ওরফে ছোটকা। ফাঁস আলগা করার জন্য যখন ছটফট করছিল কমল, তখন স্ত্রী শিল্পা ভারি কাঠের টুকরো দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ওড়নার ফাঁস আর মাথায় আঘাতের ফলে মৃত্যু হয় কমলের।
শনিবার রাতে রাজা এবং শিল্পাকে পুলিশ সারারাত টানা জেরা করে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে এক সময়ে তারা ভেঙে পড়ে। কী ভাবে কমলকে খুন করা হয়েছে সে কথা স্বীকার করে তারা। ওই রাতেই পুলিশ আনারুলকে গ্রেফতার করে। রবিবার রাজা ও আনারুলকে বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কমল খুন হন। বিয়ের আগে ও পরে একাধিকবার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিল শিল্পা। সে আর কমলের সঙ্গে সংসার করতে চাইছিল না। কিন্তু কমল কিছুতেই শিল্পাকে ছাড়তে চাইছিল না বলে শিল্পা পুলিশকে জানায়। তখনই স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে শিল্পা।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিকল্পনা করেই ঘটনার রাতে আগে থেকেই দোকান ঘরের শাটার খুলে রাখা হয়েছিল। কমল এবং তার ছোট্ট মেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেই ঘরে ঢোকে রাজা। পুলিশি জেরায় রাজা জানিয়েছে, সপ্তাহ দু’য়েক আগে শিল্পা দত্তপুকুরে পালিয়ে গিয়েছিল আনারুলের সঙ্গে। সেই সময়ে শিল্পা ও আনারুল তার মায়ের এটিএম থেকে দু’দফায় ৭০ হাজার টাকা তুলেছিল। পালাতে সাহায্য করায় রাজাকে কিছু গয়নাও দিয়েছিল সে। কমলকে খুন করতে পারলে ওই টাকা ও গয়না কিছুই ফেরত নেবে না শিল্পা—এমনটাও রাজাকে বলেছিল সে। তদন্তকারীরা জানান, দু’জনের এই পরিকল্পনার কথা জানত আনারুল। ঠিক ছিল, কমলের মৃত্যুর পর আনারুলের সঙ্গে পালাবে শিল্পা। বৃহস্পতিবার খুনের পর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শিল্পা ফোন করে আসতে বলে আনারুলকে। কিন্তু ওই ফোন শুনে ফেলেন আনারুলের বাবা। তিনিই ছেলেকে এই কাজে বাধা দেন। এরপর ছেলেকে দিয়ে ফোন করান শিল্পার বাপের বাড়িতে। শিল্পার ভাইদের কমলের খুনের কথা জানায় আনারুল। শিল্পার ভাইয়েরা কমলের বাবাকে ফোন করে খুনের কথা জানান। এরপরেই কমলের ভাই ও বাবা এসে শিল্পাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy