প্রতীকী ছবি।
বারো জন কচিকাঁচা সেজেগুজে গিয়েছিল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে। সেখানে গিয়ে জানতে পারল, স্যারেরা নাকি চাঁদা দেননি। তাই মাঠে নেমে খেলতে পারবে না কেউ। মুখ চুন করে ফিরে এসেছে সকলে। অপ্রস্তুত শিক্ষকেরাও।
সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কুলপির ৩ নম্বর চক্রের ঈশ্বরীপুরে। উত্তর ঈশ্বরীপুর প্রাথমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ঘটেছে এই ঘটনা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রণজিৎ হালদার জানান, তাঁদের মুখে উপরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, চাঁদা না দেওয়ায় ছেলেমেয়েরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারবে না।
ঈশ্বরীপুর অঞ্চল ক্রীড়া কমিটির সম্পাদক বিশ্বনাথ প্রামাণিক অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি চাঁদা-সংক্রান্ত নয়। সময় মতো প্রতিযোগীদের নাম পাঠাতে পারেনি ওই স্কুল। সে কারণে কাউকে মাঠে নামতে দেওয়া যায়নি।’’ ওই চক্রের স্কুল পরিদর্শক সহেলি দাস জানিয়েছেন একই কথা। কিন্তু ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা মাঠে গিয়েও প্রতিযোগিতায় নামতে পারল না, তাতে কি তাদের মন ভেঙে যাবে না? এ নিয়ে আর কথা বাড়াতে চাননি কর্তারা কেউ।নামের তালিকা পাঠাতে দেরি হয়েছে, সে কথা যদিও মানছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, শুধু নাম পাঠানো নয়, চাঁদা না দেওয়ার বিষয়টিও বলা হয়েছে তাঁদের।
কত টাকা চাঁদা দেওয়ার কথা ছিল স্কুলের?এ ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে শিক্ষক-পিছু ৪০০ টাকা এবং স্কুলের আরও ১২০০ টাকা দেওয়ার কথা। উত্তর ঈশ্বরীপুরে শিক্ষক দু’জন। সে ক্ষেত্রে মোট দেওয়ার কথা ছিল ২০০০ টাকা।
এই টাকা দিলেন না কেন?
স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রতিযোগিতায় এত টাকার প্রয়োজন কেন, তা বোঝা যায়নি। তাই টাকা দেওয়া হয়নি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তো বিষয়টি নিয়ে আগেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রাখতে পারতেন। এ নিয়ে মন্তব্য করেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এ ক্ষেত্রে আর একটি প্রসঙ্গ উঠে আসছে শিক্ষক মহলের আলোচনায়। সম্প্রতি বিভিন্ন জেলার কিছু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন কাঠামো পরিমার্জন-সহ তাঁদের বহু দাবি-দাওয়া মানছে না রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের ক্রীড়ার জন্য তাঁরা নিজের পকেটের টাকা আর খরচ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিক স্কুলের একাংশও এই বক্তব্য পেশ করেছিলেন। ফলে সোমবার যা ঘটল, তা এই বিদ্রোহেরই রেশ কিনা, সে প্রশ্ন উঠছে।
এ নিয়েও অবশ্য কোনও কথা বলননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। জেলা স্কুল দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিযোগিতায় কচিকাঁচারা যোগ দিতে গেলে চাঁদা দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। আবার খেলতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের ফিরতে হয়েছে, এটাও কাম্য ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy