Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

আশ্বাস সার, জলে ডোবা রহিমের বাড়ি

দিন কয়েক আগেই বিশ্বকাপের মাঠ থেকে দু’ দিনের জন্য বাড়ি ফিরেছিল রহিম। এক হাতে জুতো, অন্য হাত মায়ের হাতে ধরা— নোংরা জলে পা ডুবিয়ে এ ভাবেই ঘরে ঢোকে রহিম। সে দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রীরা।

পা-ভিজিয়েই: চলছে যাতায়াত। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

পা-ভিজিয়েই: চলছে যাতায়াত। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

ছেলে বাড়ি ফিরবে। তাই জলে ডুবে থাকা রাস্তায় রাবিশ ফেলার ব্যবস্থা করেছিলেন রফিক আলি নিজেই। জুনিয়র বিশ্বকাপ ফুটবল খেলোয়াড় রহিম আলির বাবা তিনি। বাড়ির সামনে থেকে মোড় পর্যন্ত পুরোটাই জলে ডোবা। এর বাড়ির পিছন, তার রান্নাঘর ডিঙিয়েও বাড়িতে ঢুকতে জল না ভেঙে উপায় নেই রহিমদের। ইছাপুর বিবেকনগরে রফিকের বাড়ির সামনে এখনও গোড়ালি ডোবা জল। অসময়ের বৃষ্টির জল, তা-ও নামার নাম নেই।

দিন কয়েক আগেই বিশ্বকাপের মাঠ থেকে দু’ দিনের জন্য বাড়ি ফিরেছিল রহিম। এক হাতে জুতো, অন্য হাত মায়ের হাতে ধরা— নোংরা জলে পা ডুবিয়ে এ ভাবেই ঘরে ঢোকে রহিম। সে দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রীরা। খবরের কাগজে ছবি প্রকাশের পরে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা দ্রুত রাস্তা বানানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরা জানান, রহিমের জন্য তাঁরা বাড়ির সামনের রাস্তা সারানোর সুপারিশ করবেন প্রশাসনের কাছে।

সম্প্রতি ওই এলাকায় রহিমের সংবর্ধনায় একটি অনুষ্ঠানও হয়। সেখানে ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘রহিম আলি আমাদের গর্ব। ওর বাড়ির সামনের রাস্তা সারানোর বিষয়ে আমরা উদ্যোগী হব।’’ কিন্তু দিন গড়িয়ে গেলেও রাস্তায় আধলা ইটও পড়েনি। এ দিকে রহিমও খেলার জন্য সৌদি আরবে পাড়ি দিয়েছে। কালী পুজোর সময়ে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ফের রহিমের বাড়ির সামনের রাস্তা জলে ডুবেছে। ব্যারাকপুর পুরসভার জঞ্জাল বিভাগে গাড়ি চালান রহিমের বাবা। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘সবাই এত কথা দিলেন, কিন্তু সকলেই ভুলে গেলেন। আমরা নিজেরা কিছু রাবিশ ফেলেছি। কিন্তু সেটা সিন্ধুতে বিন্দু।’’

রহিমের বাড়ি কাউগাছি-১ পঞ্চায়েতে। পাশেই উত্তর ব্যারাকপুর এবং ভাটপাড়া দু’টি পুরসভা। কাউগাছি ১ পঞ্চায়েতের প্রধান প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তীকে কয়েক বার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ বলেন, ‘‘রহিম ঘরের ছেলে। ওর জন্য কিছু করতে পারলে ভাল লাগবে। কিন্তু ওর বাড়িটা পঞ্চায়েত এলাকায়। তাই এটা পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদকে দেখতে হবে।’’ সোমনাথবাবু জানান, জল না নামলে রাস্তার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ১৪০ মিটার রাস্তার মাপজোক হয়েছে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বিষয়টি দেখছেন। পার্থবাবু বলেন, ‘‘অনেক আগেই ওই রাস্তা মেরামত করা উচিত ছিল। অধিকাংশ রাস্তাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। রহিমের বাড়ির সামনের রাস্তটা দ্রুত হবে।’’

বিশ্বকাপ খেলে ঘরে ফেরা ছেলের পা যাতে আর নোংরা জলে না ডোবে, তাই ওই রাস্তা নিয়ে চলতি সপ্তাহেই প্রশাসনের কর্তাদের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন রফিক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE