প্রথম ভোটের উন্মাদনা হালিশহরের নতুন ভোটারদের মধ্যেও। রাজনীতি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন তাঁরা। ভাবছেন এলাকার সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়েও। অনেকে জানালেন, প্রথম বার ভোট দেবেন বলেই এলাকার অনেক কিছু এখন নজরে পড়ছে। যে সব নিয়ে হয় তো এত দিন মাথাই ঘামাননি, সে সব নিয়েও আলোচনা চলছে বন্ধু-মহলে। বড়দের রাজনৈতিক বিতর্কেও উৎসাহ দেখাচ্ছেন কেউ কেউ।
বেলঘরিয়া রামকৃষ্ণ মিশন শিল্পপীঠের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শোভন মণ্ডলের বাড়ি হালিশহরের নতুন বারুইপাড়া। এ বার প্রথম ভোট। কেমন লাগছে? শোভনের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘‘কোনও দল দেখে নয়, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেব। নিকাশি ও রাস্তার সমস্যা আছে। রাস্তার কলে জলের অপচয় হয় প্রবল ভাবে। আগের বার তেমন উন্নয়ন হয়নি, যতটা প্রতিশ্রুতি ছিল।’’
হালিশহর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তন্ময় পাল আদর্শ বিদ্যাপীঠের ছাত্র। এ বারই উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ভোট দেব তাঁকেই, যাঁকে কাজের লোক বলে মনে হবে। প্রথম ভোট কোনও ভাবেই নষ্ট করতে চাই না।’’ যিনিই নির্বাচিত হোন না কেন, তাঁর কাছে তন্ময়ের আবেদন, বর্ষায় জল দাঁড়ানোর সমস্যার সমাধান আগে দরকার। কোথাও কোথাও তো নৌকো নিয়ে বেরনোর অবস্থা তৈরি হয়। সে দিকে যেন নজর দেওয়া হয়। বাড়ির কাছে রামপ্রসাদ খেলার মাঠের পাশের রাস্তাটা দেখিয়ে তন্ময় বলেন, ‘‘নিকাশি সমস্যা আছে। তার উপর রাস্তাটি নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায়।’’
বাঁ দিক থেকে, আঁচল শর্মা, দীপ দত্ত, কাজল হালদার, শোভন মণ্ডল, তন্ময় পাল ও তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গা ঘেঁষে রেল কলোনি। পুরসভার রাস্তায় আলো, রাস্তার ধারে জলের কল সবই আছে। কাঁচরাপাড়া কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রী আঁচল শর্মা বলেন, ‘‘আগে এই অঞ্চলটিতে নিকাশি সমস্যা ছিল প্রকট। এখন আর নেই। রাস্তাও সারানো হয়েছে। ভোট দেব এটা আনন্দের। সকাল সকালই যাব।’’
হালিশহর নিউ পূর্বাচলের তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিজিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী। প্রথম ভোট নিয়ে উত্তেজনার শেষ নেই তাঁর। নিজের নতুন ভোটার কার্ডটি হাতে নিয়ে তরুণী ভোটার বলেন, ‘‘সব কাজ ফেলে আগে ভোট। তারপরে অন্য সব। আগের থেকে উন্নয়ন অনেক হয়েছে। কিন্তু কিছু কাজ বাকি আছে। বোর্ড যারাই গড়ুক, উন্নয়নের জোয়ার যেন অব্যাহত থাকে। এটাই চাওয়া।’’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের দীপ দত্তও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। ভোট নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন তিনিও। বললেন, ‘‘এত দিন সবাইকে ভোট দিতে যেতে দেখতাম। এখন নিজে ভোট দেব। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করব। এটা ভেবে ভাল লাগছে।’’ নিজের এলাকার কিছু সমস্যা নিয়ে ক্ষোভও আছে দীপের। বাড়ির কাছে গলি রাস্তা পাকা হয়নি এত বছরেও। নিকাশি সমস্যা আছে। বেকারদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিয়েও পুরসভা যদি কোনও সুযোগের কথা ভাবে তবে ভাল হয় বলে মনে করেন দীপ।
১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজল হালদারও প্রথম ভোট নিয়ে বেজায় খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ির সকলে মিলে এক সঙ্গে ভোট দিতে যাব। রাস্তাঘাটে অনেক উন্নয়ন হলেও বেশ কিছু রাস্তার এমন অবস্থা যে গাড়ি ঢোকানো মুশকিল। সেই রাস্তাগুলির দিকে এ বার নজর দেওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy