Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
By Election

প্রচারে আসছে গুলি-বোমার প্রসঙ্গ

আগামী ১৩ নভেম্বর উপ-নির্বাচন। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ রুট মার্চ করছে।

বো‌মা উদ্ধার।

বো‌মা উদ্ধার। — প্রতীকী চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
হাড়োয়া  শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৭
Share: Save:

ভোট আসে-যায়। প্রচারে নানা দল আশ্বাস দিলেও হাড়োয়া বিধানসভা এলাকায় গুলি-বোমার সংস্কৃতি বন্ধ হয় না, এই ক্ষোভ রয়েছে বহু বাসিন্দারই। এ বারও উপ-নির্বাচনের প্রচারে বিভিন্ন দলের মুখে তাঁরা গুলি-বোমার সংস্কৃতি বন্ধের আশ্বাস শুনছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় যাচ্ছে না।

আগামী ১৩ নভেম্বর উপ-নির্বাচন। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ রুট মার্চ করছে। দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য ঠেকাতে অভিযানও চলছে। ভোট-পর্ব শান্তিপূর্ণ করতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ চান, শুধু ভোটের সময় নয়, বছরভর শান্তিতে বসবাস করতে। গত কয়েক বছরে তারা অনেক বার গুলি-বোমার তাণ্ডব দেখেছেন। এখনও তা বন্ধ হয়নি।

ওই সংস্কৃতি যে হাড়োয়া বিধানসভা এলাকায় এখনও বিদ্যমান, মানছে কংগ্রেস। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মূলত মেছোভেড়ির টাকার বখরা নিয়ে বোমা-গুলি চলে। ওই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলও গুলি-বোমা চলার বড় কারণ। জেলা কংগ্রেস ( গ্রামীণ) সভাপতি অমিত মজুমদার বলেন," হাড়োয়ায় বোমা-গুলির সংস্কৃতি পুলিশ প্রশাসন বন্ধ করতে পারেনি। মানুষ আতঙ্কিত। নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। তাঁরা ভয়ের আবহে থাকেন।’’ শাসক দল অবশ্য গোষ্ঠীকোন্দলের কথা মানেনি।

সন্ত্রাসমুক্ত শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তারাই পারবে, এই দাবি করে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘হাড়োয়ার বিভিন্ন এলাকায় বোমা-গুলি মজুত আছে। প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে তা দ্রুত উদ্ধার করতে বলেছি।’’

প্রচারে আইএসএফ নেতৃত্বের অভিযোগ, শাসক দলের মদতে এখানে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য চলছে। পুলিশ প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করলে তা বন্ধ হওয়া সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। তবে, ভোটেও আইএসএফ নেতৃত্ব গুলি-বোমার জেরে এলাকা অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। দলের জেলা সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রচারে আমরা শান্তি ফিরিযে আনার কথা বলছি। হাড়োয়া মানেই অশান্তির জায়গা, এই ধারণা পাল্টে দিতে চাইছি। মানুষ যাঁকে খুশি ভোট দিন। কিন্তু তাঁরা যেন নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন।’’ প্রায় একই সুর সিপিএম নেতৃত্বের গলাতেও।

কী বলছে শাসক দল?

উপ-নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন শেখ রবিউল ইসলাম। তাঁর অবশ্য দাবি, ‘‘এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্তিতি এখন অনেক ভাল। আরও কী করে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। মানুষের দাবি, সমস্যার কথা শুনছি। সমাধানের চেষ্টা করছি।’’

হিংসার নজির

জুলাই, ২০২৪: শম্পা দাস নামে এক মহিলাকে রাস্তায় গুলি করা হয় বলে অভিযোগ।

অগস্ট, ২০২৩: রাস্তায় গুলিতে খুন শেখ সাহেব আলি নামে তৃণমূলের একপঞ্চায়েত সদস্য।

জুলাই, ২০২৩: বোমা ফেটে মৃত্যু পরিতোষ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির। পরিবারেরদাবি ছিল, খুন।

২০ এপ্রিল, ২০১৮: বাড়ির পাশে ফুল তুলতে গিয়ে বল ভেবে পড়ে থাকা বোমা হাতে নিয়েছিল পৌলোমী হালদার নামে সাত বছরের এক শিশু। বোমা ফেটে তার হাতউড়ে যায়।

২১ জুলাই, ২০১২: ট্যাংরামারিতে দলের ‘শহিদ দিবস’-এর কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে গুলিতে খুন লক্ষ্মীবালা মণ্ডল এবং সন্ন্যাসী সর্দার নামে দুই তৃণমূল কর্মী।

“নাকা চেকিং, রাতের টহল চলছে। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে রুট মার্চ চলছে।”

— হোসেন মেহেদি রহমানবসিরহাটের পুলিশ সুপার

অন্য বিষয়গুলি:

By Election 2024 Vote WB Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE