যশোর রোড (৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক) সম্প্রসারণের কথা মাথায় রেখে বনগাঁ শহরে তৈরি হবে রেলওয়ে ওভার ব্রিজ (আরওবি)। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে জমি মাপজোকের কাজ। পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।
যশোর রোড সম্প্রসারণ হলে একদিকে যেমন সড়ক পথে বারাসত বা কলকাতায় যেতে সময় অনেকটাই কমে যাবে, তেমনই শহরবাসী নিত্য দিনের যানজট থেকে মুক্তি পাবেন। স্থানীয় বক্সিপল্লি এলাকার বাসিন্দা সঞ্জীব বক্সি বলেন, ‘‘বনগাঁ থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সড়ক পথে যশোর রোড ধরে যেতে আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তা ছাড়া, সংকীর্ণ সড়কের কারণে দুর্ঘটনা এখানে লেগেই আছে। আমরা চাই দ্রুত সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হোক।’’ বর্তমানে বনগাঁ শহরে যশোর রোডে ফুটপাত বলে কিছু নেই। দীর্ঘ দিন ধরেই তা জবরদখল হয়ে গিয়েছে। শহরের মধ্যে দু’টি বড় গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে না। মানুষের পায়ে হাঁটার জায়গা পর্যন্ত নেই। তার উপরে আছে ভ্যান, টোটো ও অটোর দাপট। সড়ক পথে যানজট ও সংকীর্ণতা জন্য বারাসত বা কলকাতা যেতে চান না। কোনও কারণে ট্রেন বন্ধ থাকলে অনেকে সে দিনের মতো কলকাতা যাওয়াই স্থগিত রাখেন। তবু সড়ক পথ ধরেন না।
বর্তমান সড়কের মাঝখান থেকে দু’দিকে কোথাও ১৫ মিটার কোথাও ২০ মিটার সরকারি জায়গা আছে। যা দীর্ঘ দিন ধরেই জবরদখল হয়ে আছে। মূলত ওই সব সরকারি জায়গায় থাকা দোকানদারেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য বনগাঁ শহরে একটি হকার্স মার্কেট তৈরি করা হবে। স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বনগাঁ মানুষের স্বার্থে সকলকে বুঝিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে। সমস্যা হবে না। সকলেই সহযোগিতা করতে চাইছেন।’’
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ স্থানীয় যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠ স্কুলের সামনে থেকে সড়কের জমি মাপজোকের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় হীরালাল মূর্তির কাছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিল বনগাঁ থানার পুলিশ, বনগাঁ জিআরপি, আরপিএফ। ছিলেন বনগাঁর উপ পুরপ্রধান কৃষ্ণা রায়-সহ কয়েকজন কাউন্সিলর। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর নথিভুক্ত হয়েছে।
শহরে ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় সড়কের উপর দিয়ে রেললাইন গিয়েছে। গেট পড়লে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়। সে জন্যই তৈরি হচ্ছে উড়ালপুল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বনগাঁ মহকুমার সহকারী বাস্তুকার জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উড়ালপুল তৈরির জন্য আমাদের ৬৬টি গাছ কাটতে হবে। যে জন্য বন দফতরের অনুমতিও মিলেছে। গাছ কাটবে ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত উড়ালপুলটি স্থানীয় যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠ স্কুলের সামনে থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে হীরালাল মূর্তি এলাকায়। ১১১৫ মিটার লম্বা এবং ১২ মিটার চওড়া হওয়ার কথা উড়ালপুল। ওই কাজের জন্য উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যশোর রোডে দু’টি সার্ভিস রোড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৈরি হবে নিকাশি নালা ও সাবওয়ে। এখন যশোর রোড ৫ মিটার চওড়া। সেটির দু’দিকে সাড়ে ৫ মিটার করে মোট ১১ মিটার আরও চওড়া করা হবে। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮১ কোটি টাকা। যা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy