Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

কাকদ্বীপে এজলাস বয়কটের ডাক

গত মাসে আইনজীবীদের জন্য ক্যান্টিন এবং সেরেস্তা করার অনুমোদন মৌখিক ভাবে দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গিরীশকুমার গুপ্ত। কিন্তু সে সব নিয়ে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতের বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের একাংশের মতানৈক্যের জেরে বুধবার থেকে এজলাস বয়কটের পথে হাঁটছেন আইনজীবীদের ওই অংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩২
Share: Save:

গত মাসে আইনজীবীদের জন্য ক্যান্টিন এবং সেরেস্তা করার অনুমোদন মৌখিক ভাবে দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গিরীশকুমার গুপ্ত। কিন্তু সে সব নিয়ে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতের বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের একাংশের মতানৈক্যের জেরে বুধবার থেকে এজলাস বয়কটের পথে হাঁটছেন আইনজীবীদের ওই অংশ।

কাকদ্বীপ মহকুমা আদালত বার অ্যাসোসিয়েশেনর সভাপতি মানস দাস বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি বলে দেওয়ার পরেও এখানকার বিচারকেরা ক্যান্টিন নিয়ে উল্টো রিপোর্ট দিয়ে তা খারিজ করে দিয়েছেন। সেরেস্তা, ফটোকপির মেশিন বসানোও বাতিল হয়ে গিয়েছে। দাবি না মেটা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’’ মঙ্গলবার সকাল থেকে বারের দীর্ঘ বৈঠকের পরে বয়কটের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

কেন হচ্ছে সমস্যা?

আইনজীবীদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মডেল আদালবাড়ির নীচের তলায় ক্যান্টিন করার ক্ষেত্রে ঘোর আপত্তি বিচারকদের। জেলা বিচারকের কাছে মহকুমা আদালত থেকে পাঠানো রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত ক্যান্টিনের ঘরে জলের লাইন নেই, আগুন ধরার ঝুঁকি রয়েছে। তা ছাড়া, আদালতবাড়িতে ঢোকার মুখে ওই ক্যান্টিন চালু হলে অবাঞ্ছিত লোকের ভিড়ে পরিবেশ খারাপ হবে। আদালতে ফটোকপির মেশিনের প্রয়োজন। কিন্তু তা বসানোর জায়গা অল্প পরিসর, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বলে তা-ও খারিজ করা হয়েছে রিপোর্টে।

যদিও এই সব যুক্তি উড়িয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবপ্রকাশ জানা বলেন, ‘‘জলের লাইন টানা হবে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা হবে। অসুবিধা কী?’’ আদালত চত্বরের বাইরে বেরিয়ে খেতে, ফটোকপি করতে গিয়ে সমস্যা হয় বলেও জানালেন তিনি।

পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, আদালত বাড়ির প্ল্যানেই চারতলায় ক্যান্টিনের কথা বলা রয়েছে। গত মাসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কাকদ্বীপ আদালত পরিদর্শনে এলে আইনজীবীদের আবেদন মেনে তিনি তা নীচের তলায় আনতে বলেন।

সরকারি আইনজীবী এবং ল’ক্লার্কদের একটি বড় অংশও অবশ্য বার অ্যাসোসিয়েশনের যুক্তি মানছেন না। সরকারি আইনজীবী গুরুপদ দাসের কথায়, ‘‘প্রধান বিচারপতির নির্দেশ মেনে ক্যান্টিন হোক। কিন্তু ক্যান্টিন, ফটোকপি চালানোর দায়িত্ব বার অ্যাসোসিয়েশনের হাতে থাকলে ব্যবসা শুরু হতেই পারে। বিচারকেরা কিছু ভুল রিপোর্ট দেননি।’’ এ জন্য তাঁরা এজলাস বয়কটে সামিল হচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন গুরুপদবাবু।

সমস্যা সেরেস্তা তৈরি নিয়েও। আদালত বাড়ির উঠোনের নিচু জায়গায় মাটি ফেলে আইনজীবী, ল’ক্লার্করা ভরাট করেছেন। প্রধান বিচারপতি তার একটি অংশে সেরেস্তা তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তা নিয়ে কোনও সুপারিশই আদালত প্রশাসনের তরফে যায়নি বলে দাবি করেন বারের নেতারা। নীচতলার লাউঞ্জে অল্প জায়গায় বসে কাজ করা, খাওয়া-দাওয়া সারা, মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Kakdwip court Boycott Lawyer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE