মায়াবী: বারাসতের নবপল্লিতে ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের মণ্ডপ। ছবি: সুদীপ ঘোষ
ভিড় শুরু হয়েছিল সকালেই। বিকেল গড়াতে সেই ভিড় বদলে গেল জনসমুদ্রে। শুধু মন্ত্রী, নেতা, মুম্বইয়ের অভিনেতা-অভিনেত্রী বা রাজ্যের মানুষই নন, বিদেশি অতিথিরাও ভিড় করেছেন শহরে। মণ্ডপ, প্রতিমা আর আলোকসজ্জা দেখে বিস্মিত তাঁরা।
সব মিলিয়ে কালীপুজোয় আমূল বদলে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সদর বারাসত। প্রতিটি রাস্তা ভাসছে মায়াবী আলোয়। অঞ্জলি দেওয়ার পাশাপাশি চলেছে নিজস্বী তোলার ধুম।
বারাসত থানা সংলগ্ন ‘কেএনসি রেজিমেন্ট’ বদলে গিয়েছে দেবভূমি হিমাচলে। মানালির বশিষ্ঠ মন্দির ছাড়াও সেখানে হয়েছে আরও চারটি মন্দির। বারাসত স্টেশন সংলগ্ন ‘পায়োনিয়ার অ্যাথলেটিক ক্লাবে’র রবিশাল পুকুর এখন পুণ্যতোয়া গঙ্গা। নদী-পাড়ে হরিদ্বারের মনসাদেবীর মন্দির। বিশাল মাঠে বসেছে মেলা।
কলোনি মোড় সংলগ্ন ‘নবপল্লি সর্বজনীনে’ আলোর সাজে চলছে বিশ্বকাপ ফুটবল। মস্কোর সেন্ট বাসিল্স ক্যাথিড্রালের আদলে মণ্ডপে রেশমী সুতোর কাজ। পাশেই নবপল্লি বয়েজ স্কুলের মাঠে সিকিমের চার ধাম মন্দির তৈরি করে চমকে দিয়েছে ‘আমরা সবাই।’ মূল মন্দির ছাড়াও রয়েছে চারটি ছোট মন্দির। ‘নবপল্লি ব্যায়াম সমিতি’তে ১৪ হাত সালঙ্কারা মাতৃমূর্তি দেখতে ঢল নেমেছে দর্শনার্থীর। হেলাবটতলার কাছে ‘রেজিমেন্ট’-এ উঠে এসেছে একটুকরো তাইল্যান্ড। সেখানে গির্জায় কৃষ্ণনগরের প্রতিমা।
চাঁপাডালি মোড়ের কাছে ‘শতদল সঙ্ঘে’ পৌরাণিক মন্দিরে দেবী পুরাকালের বিগ্রহের ভাবনায়। পাশেই ‘বিদ্রোহী’ এখন মহারাষ্ট্র। শিবমন্দিরের আদলে মণ্ডপে বিভিন্ন দেবদেবীর সহাবস্থান। দেখানো হয়েছে সমুদ্রমন্থন। ডাকবাংলো মোড়ের কাছে ‘সন্ধানী’ এ বার লাল পাহাড়ের দেশ। বাঁশ, পুরুলিয়ার মুখোশ, বেত, পাটকাঠি, মই দিয়ে সেজে ওঠা মণ্ডপে আদিবাসীদের আঁকা চালচিত্র। ‘শক্তি মন্দির’ তুলে ধরেছে ‘পুরানো সেই দিনের কথা।’
নির্বিচারে গাছ কেটে সবুজ ধ্বংসের বিপদ তুলে ধরেছে ‘তরুছায়া’। সেখানে দর্শকদের গাছের চারা বিলি করা হচ্ছে। সহজ পাঠের আদলে বাঁশের চটা আর শোলার মণ্ডপ ‘সাউথ ভাটরায়’। নীল পরির দেশ উঠে এসেছে ‘ছাত্রদল-এর পুজোয়। আলোর কারুকাজে এক অন্য জগৎ সেখানে। স্মার্টফোন আর কার্টুনের যুগে হারিয়ে যাচ্ছে ছেলেবেলার নানা খেলা। তা-ই তুলে ধরেছে ‘আগুয়ান সঙ্ঘ’। ‘রাইজিং স্টার’-এ আবার কাঠের চামচ দিয়ে অপরূপ মণ্ডপ। ‘ন’পাড়া ওয়েলফেয়ার কমিটি’ তুলে ধরেছে মানব জীবনচক্র।
সব মিলিয়ে বদলে গিয়েছে চেনা জেলা সদরটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy