যানজট: সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে অটো। নিজস্ব চিত্র
শহরের ফুটপাথ জুড়ে সারি দিয়ে় দাঁড়িয়ে আছে অটো। বেশির ভাগই বেআইনি। মানুষের হাঁটার উপায় নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে গাড়িগুলির পাশ দিয়েই যেতে হচ্ছে পথচারীদের।
হাবরার যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের এই অবস্থা। দিন কয়েক আগে পুরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সড়কের দু’পাশ থেকে হকার মুক্ত করা হয়েছিল। শহরবাসীর যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবে এই দোকানপাটগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জবরদখল করে থাকা দোকানদারদের হকার মার্কেট করে পুনর্বাসনও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও পথচারীদের কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে বেআইনি অটোগুলির। ফুটপাথগুলি এখন অটোস্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। ডিজেলচালিত অটো থেকে দূষণও ছড়ায়।
প্রশাসনের চোখের সামনে দিনের পর দিন রাস্তা, ফুটপাত চুরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসকদলের একাংশের মদতে ওই বেআইনি অটোর দাপট বেড়েছে হাবরায়। সে কারণে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করে না।
জেলা পরিবহণ দফতরের সরকারি প্রতিনিধি গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘হাবরার অটো চালকেরা আমাদের জানিয়েছেন, শীঘ্রই তাঁরা বেআইনি অটো পাল্টাবেন। যদি না পাল্টান, তা হলে প্রশাসনের পক্ষে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় কড়া সুরে বলেন, ‘‘১৩ মার্চের পরে হাবরায় কোনও বেআইনি অটো থাকলে আমরা অটো বাজেয়াপ্ত করব। চালকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ ডিজেল চালিত অটো চালকেরা যদি এলপিজি অটোর জন্য আবেদন করেন এবং তাঁরা যদি বৈধ রুটে অটো চালান, তা হলে ডিজেল অটো ‘কাটাই’ করে তাঁদের আইনি অটো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে দাবি সিদ্ধার্থবাবুর।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বুকে কয়েকশো বেআইনি অটো ভাবে চলে। ফুটপাথ দখল তো আছেই পাশাপাশি যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলাও চলছে। এতে শহরে যানজট সমস্যা আরও বেড়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। প্রশাসনিক নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এই অটো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাসিন্দারা জানান, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে এই সমস্ত অটোগুলি চলে। ফলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
এমনিতেই হাবরার যশোর রোডের যানজটে অতিষ্ঠ মানুষ। স্থানীয় চোংদা মোড় থেকে ২ নম্বর রেলগেট পর্যন্ত মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার পথ পেরোতে সময় লাগে পৌনে এক ঘণ্টা। গাড়ির মধ্যে বসে যাত্রীদের ‘নরকযন্ত্রণা’ ভোগ করতে হয়। তার মধ্যে আবার অটোর উৎপাত। মানুষ চান, ফুটপাত দখল বন্ধ থাকে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সব ডিজেল অটো চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। সরকার বেআইনি অটো কাটাই করে নতুন এলপিজি অটো দিচ্ছে। তারপরেও এখানকার অটো চালকদের মধ্যে আইনি অটো নেওয়ার কোনও সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না। হাবরার পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বেআইনি অটো বন্ধ করতে পরিবহণ দফতরকে বলা হয়েছে।’’
হাবরা পুরসভার কাউন্সিলর তথা শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা কৃষ্ণপদ দাস জানান, ‘‘আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই অটো চালকদের জানিয়ে দিয়েছি, তাঁরা যেন অটো বদলে আইনি অটো নিয়ে নেন। কিন্তু চালকদের মধ্যে গাফিলতি রয়েছে। আমরা ফের কড়া ভাবে জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy