বন্ধের দিনে কেন বন্ধ রাখা হয়েছিল, এই প্রশ্ন তুলে অশোকনগরের গুমা কৃষি সমবায় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের এক অস্থায়ী কর্মী-সহ দু’জনকে মারধর করে ব্যাঙ্কের চাবি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এলাকার এক তৃণমূল নেতা এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালের ওই ঘটনায় তৃণমূল নেতাদেরই হস্তক্ষেপে ব্যাঙ্ক খোলে। ব্যাঙ্কটির পরিচালন সমিতিও তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ঘটনাটি থানা-পুলিশ পর্যন্ত না গড়ালেও ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে।
পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে হয় হাবরা-২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা শেখ আলাউদ্দিনকে। তিনি বলেন, ‘‘আমি দাঁড়িয়ে থেকে ব্যাঙ্কটি খুলিয়ে দিয়েছি।’’ অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেই ব্যাঙ্ক খোলার নির্দেশ দিই।’’
ওই ব্যাঙ্ক এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বন্ধে ওই ব্যাঙ্কটি নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছিল। শুক্রবার, মে দিবসের ছুটির কারণে ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ব্যাঙ্কটি খুলতে আসেন অস্থায়ী কর্মী মিরাজুল শাহাজি।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বন্ধের দিনেই ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখার জন্য এক তৃণমূল নেতা তাঁদের ফোনে হুমকি দিয়েছিলেন। শনিবার মিরাজুলকে দেখে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সইদুল ইসলাম মোল্লা লোকজন নিয়ে সেখানে হাজির হন। মিরাজুলকে মারধর করে তাঁরা ব্যাঙ্কের চাবি নিয়ে নেন। পাশের দোকানদার শেখ জাকির হোসেন প্রতিবাদ করলে তাঁকেও সইদুলের লোকেরা চড় মারে বলে অভিযোগ।
সইদুল দলবল নিয়ে চলে যাওয়ার পরে ব্যাঙ্কের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকেন মিরাজুল। কিছু কর্মী এবং গ্রাহকও চলে আসেন। কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ আলাউদ্দিন গিয়ে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে যান মিরাজুলদের। তার পরেই এক যুবক গিয়ে ব্যাঙ্কের চাবি তুলে দেন মিরাজুলদের হাতে। দুপুর ১২টা নাগাদ তৃণমূল নেতারা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদক আবদুল ওয়াদুত বলেন, ‘‘বোর্ডের সিদ্ধান্ত, কোনও বড় রাজনৈতিক দল বন্ধ ডাকলে নিরাপত্তার কারণে ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখা হবে। তাই বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। ওই দিন দুপুর বারোটার সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে ব্যাঙ্কটি খুলে রাখার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে ব্যাঙ্কটি খুলে রাখা যায়নি। তার জন্য যে আমাদের কর্মীকে মার খেতে হবে, ভাবতে পারিনি।’’
মারধর বা ব্যাঙ্কের চাবি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সইদুল। তিনি গুমা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক। তাঁর দাবি, ‘‘বহু মানুষ পরিষেবা না পেয়ে বন্ধের দিনে হয়রান হবেন ভেবেই ব্যাঙ্কটি খুলে রাখতে অনুরোধ করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসনকে বলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দিয়েছিলাম। শনিবার সকালে অপরিচিত লোকজনকে নিয়ে এসে ওই কর্মীকে ব্যাঙ্ক খুলতে দেখে প্রতিবাদ করি। বন্ধের দিন কেন সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা হল তা জানতে চাই। এর বেশি কিছু ঘটেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy